বৌদ্ধ আর্য্যপুরুষ মহাসাধক শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে)-এর জন্মোৎসবে রাঙামাটি রাজবন বিহারে অগণিত পুণ্যার্থীর ঢল নেমেছে।
আজ শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) রাঙামাটির রাজবন বিহারে উদযাপিত হয়েছে তাঁর জন্মোৎসব।
বৌদ্ধধর্মীয় মহাগুরু বনভান্তে ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বৌদ্ধধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ।
বনভান্তের জন্ম ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙামাটি সদরের ১১৫ নম্বর মগবান মৌজার মোড়ঘোনা নামক গ্রামের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে। তিনি মহামতি গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ১৯৪৯ সালে গৃহত্যাগ করে অর্হত্ত্ব লাভ করেন। মহাপরিনির্বাণ লাভের মধ্য দিয়ে দেহত্যাগ করেন ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি। জীবদ্দশায় আমরণ রাজবন বিহারে অবস্থান করেছিলেন তিনি।
বনভান্তের এবারের জন্মোৎসবে রাঙামাটি রাজবন বিহারে পালিত হয়েছে ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠান। এতে যোগ দেন হাজারও পুণ্যার্থী।
আজ শুক্রবার ভোরে রাজবন বিহারে সংরক্ষিত বনভান্তের পবিত্র দেহধাতুতে পুষ্পাঞ্জলি দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় তাঁর জন্মোৎসব। ভক্তকূলের শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় বনভান্তের দেহধাতু।
তারপর কেক কেটে ও মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে উদযাপিত হয় বনভান্তের জন্মদিন। মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে কেক কাটেন বনভান্তের উত্তরসূরি ও রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবির। এ সময় উড়ানো হয় হাজারও বেলুন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাজবন
বিহার উপাসক-উপাসিকা পরিষদের সভাপতি গৌতম দেওয়ানসহ ভিক্ষুসংঘ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও অগণিত পুণ্যার্থী।
এ ছাড়াও সকালে বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল প্রার্থনা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজা ও ধর্মীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বনভান্তের অমৃতময় বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে পুণ্যার্থীদের মাঝে ধর্মদেশনা দেন রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষুপ্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরসহ অন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুরা। সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও ফানুস উড়িয়ে শেষ হয় বনভান্তের ১০২তম জন্মোৎসব।
