রাঙামাটিতে অর্জিত হয়নি বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা

প্রান্ত রনি, রাঙামাটি | শনিবার , ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৯:০৮ পূর্বাহ্ণ

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে এবছর বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে চুক্তিভিত্তিক আটটি রাইস মিল থেকে আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রায় চার মাস বোরো ধানচাল সংগ্রহের নির্ধারিত সময়ের পর সময়সীমা আর বর্ধিত করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারমূল্যের চেয়ে খাদ্য বিভাগের ধান ক্রয়মূল্য কম হওয়ায় খাদ্য বিভাগের কাছে ধান বিক্রিতে অনেক কৃষকের অনীহা রয়েছে। বাড়তি লাভবান হওয়ার আশায় তারা বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে ধান বিক্রয় করছেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্য মতে, চলতি বছর রাঙামাটি জেলায় মোট ৮২৩ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল খাদ্য বিভাগের। তবে ৪৫৬ মেট্রিক টন বোরো ধান সংগ্রহ করে গুদামজাত করা গেছে। ঘাটতি রয়েছে ৩৬৭ মেট্রিক টন। অন্যদিকে চুক্তিভিত্তিক আটটি রাইস মিলের কাছ থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৬১৬ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এবছর প্রতিকেজি বোরো ধানের ক্রয়মূল্য ছিল ৩২ টাকা এবং প্রতিকেজি আতপ চালের ক্রয়মূল্য ছিল ৪৪ টাকা।

উপজেলাভিত্তিক জেলার দশ উপজেলা থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কেবলমাত্র তিনটি উপজেলা থেকে ধান সংগ্রহ করা গেছে। জেলার বাঘাইছড়ি ও জুরাছড়ি থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। লংগদুতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় অর্ধেক ৯০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ হয়। জেলার সদর উপজেলায় ৫৫, কাউখালীতে ৫১, কাপ্তাইয়ে ৩১, রাজস্থলীতে ২৮, বিলাইছড়িতে ২৫, জুরাছড়ি ৪৭, নানিয়ারচরে ৪৯, বরকলে ৪০, লংগদুতে ১৭৮ এবং বাঘাইছড়িতে ৩১৯ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এবছর বোরো মৌসুমের ধান ও চাল সংগ্রহের সময়সীমা ছিল ৭ মে থেকে ৩১ আগস্ট। তবে নির্ধারিত প্রায় চার মাস ধানচাল সংগ্রহের পর আর সময়সীমা বর্ধিত করা হয়নি।

খাদ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানায়, রাঙামাটির দশ উপজেলায় ধান আবাদ ও উৎপাদন হলেও সব উপজেলা থেকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী সংগ্রহ অর্জিত হয়নি। বিশেষত বিভিন্ন উপজেলায় কৃষকদের পরিবারের বাৎসরিক চাহিদা অনুযায়ী ধান উদ্বৃত্ত থাকায় তারা বিক্রয় করেন না। অনেকেই ব্যবসায়ীদের কাছে খাদ্য বিভাগের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কিছুটা বাড়তি দাম পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করেন।

রাঙামাটির মেসার্স তন্ময় অটো রাইচ মিলের স্বত্ত্বাধিকারী তপন কান্তি পাল আজাদীকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী আমার মিল থেকে ৪৩ মেট্রিক টন আতপ চালের চাহিদা ছিল। পরবর্তীতে আরও ৪৩ মেট্রিক টন চাল নেয়া হয়েছে। মোট ৮৬ মেট্রিক টন আতপ চাল ৪৪ টাকা কেজিদরে বিক্রয় করেছি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কানিজ জাহান বিন্দু আজাদীকে বলেন, এবছর আমাদের বোরো মৌসুমের ধানচাল সংগ্রহের মধ্যে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ধান সংগ্রহ না হলেও অর্ধেকের বেশি পূরণ হয়েছে।

জেলার কয়েকটি উপজেলায় এবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবার সম্ভাবনা না থাকায় আমরা সংগ্রহ কার্যক্রম সমর্পণ করেছি। বাঘাইছড়ি উপজেলাতে এবছর তিনবার বন্যা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাজারে হামলা এদেশের নবী প্রেমিকরা বরদাস্ত করবে না
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশের চালির ধাক্কায় ভেঙে গেল ধোপাছড়ির কাঠের সেতু