বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ভাষ্য মতে, ‘উত্তেজিত হওয়া অসুস্থ মানুষদের যেমন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ঠিক তেমনি সুস্থ মানুষেরও এর থেকে বিরত থাকা প্রয়োজন। কারণ এতে সু্স্থ বা অসুস্থ উভয়েরই ক্ষতি হয়, তবে তৎক্ষণাৎ ক্ষতির পরিমাণ দেখা না গেলেও ভবিষ্যতে মন তথা শরীরে এর প্রভাব পড়ে’। মাঝে মধ্যে কিছু উত্তেজনা বা রাগারাগি বিনা কারণেও সংঘটিত হয়। তবে রাগারাগি বা উত্তেজিত না হয়ে তৎক্ষণাৎ ঠাণ্ডা মাথায় বুঝিয়ে বললে প্রায় সময়ে দু’পক্ষের ভুল বুঝাবুঝির অবসান হয়। তাইতো বুদ্ধিজীবীগণ প্রায়ই ‘রাগলেন তো হারলেন’ বলে থাকেন। মন মেজাজ খারাপ থাকলে তখন নিজে স্বাভাবিক তথা মন ভালো না হওয়া পর্যন্ত অন্যের সঙ্গে তর্কে না জড়ানোই মঙ্গলজনক। কারণ এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশংকা থাকে। মাঝে মধ্যে এমনও দেখা যায় যে, না বুঝে অন্যকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে রাগারাগি করার পরে প্রমাণিত হয় যে, অন্যের প্রতি রাগারাগি বা উত্তেজিত হওয়ার মতো কিছুই হয়নি, এটি তার নিজেরই ভুল। ঐ অবস্থায় তাঁকে ‘সরি’ বলতেও শোনা যায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো এ সরি শব্দটি অত্যন্ত ছোট হলেও সরি বলা লোকটি বাস্তবে জ্ঞানী হলে এটি বলতে তিনি মারাত্মক মনোকষ্ট অনুভব করেন। অনেক সময় দেখা যায়, উত্তেজিত হয়ে মন্দ আচরণ করার ফলে যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি হয় একদিন তার অবসান হলেও আগের মতো মধুর সম্পর্ক আর গড়ে উঠে না।
এছাড়া মাঝখানে পেরিয়া যাওয়া সময়ে আনন্দঘন পরিবেশ হতে বঞ্চিত হতে হয়। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ভুলের অবসান হওয়ার আগেই অনেককে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করতে দেখা যায়, ফলে বিনা কারণে গালমন্দ করা ব্যক্তির নিকট দোষী ব্যক্তি ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পায় না। তা-ই তো অন্যের প্রতি রাগারাগি বা উত্তেজিত না হওয়ার বিষয়ে প্রায় প্রত্যেক ধর্মেই কঠোর ভাবে নিষেধ করা হয়েছে, কাজেই এটিকে জিঁইয়ে রাখা কোনোক্রমেই উচিত নয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মিলে যাওয়াই মহত্ত্বের লক্ষণ। কারণ এটি মন, শরীর, পারিপার্শ্বিক পরিবেশসহ সার্বিক বিবেচনায় অকল্পনীয় ক্ষতিকর।