রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল চান প্রধান উপদেষ্টা

| মঙ্গলবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২৪ at ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে মিয়ানমারের রাখাইনে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরির আহ্বান রেখে বলেছেন, এই উদ্যোগ সংকট সমাধানের প্রধান উপায় হতে পারে। মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার টমাস অ্যান্ড্রুজ গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার তেজগাঁও কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

অ্যান্ড্রুজ গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বৈঠকের ফাঁকে উত্থাপিত রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে তিন দফা প্রস্তাব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা একটি ‘গভীর সংকট’ সৃষ্টি করেছে এবং বাস্তুচ্যুত ও ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা জরুরিভাবে প্রয়োজন, বিশেষ করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য। রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারে কমপক্ষে ৩১ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যেখানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি বছরের পর বছর ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। তিনি বলেন, সামপ্রতিক সময়ে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা রাখাইন থেকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে কক্সবাজারে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রাখাইনের বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য একটি ‘নিরাপদ অঞ্চল’ তৈরির প্রস্তাব দেন। তিনি তাদের সহায়তা দেওয়ার উপায় খুঁজে বের করার কথাও বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি (নিরাপদ অঞ্চল) ‘সহায়তা পৌঁছানোর জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায়’ হতে পারে। এই উদ্যোগ রাখাইন সংকট সমাধানের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করতে পারে, যা বাংলাদেশে হাজার হাজার নতুন শরণার্থীদের প্রবেশ রোধ করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়, বিশেষ করে আসিয়ানের সঙ্গে রাখাইনের সহিংসতা ও বাস্তুচ্যুতদের বিষয়ে আলোচনা করা উচিত। আলোচনার সময় অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গাদের তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান রাখেন।

২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ এবং সমপ্রতি বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বিপ্লব সম্পর্কেও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের তিন দফা প্রস্তাব তারই অংশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসামাজিক জীবনে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে চাই সচেতনতা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬