রাউজান-রাঙামাটি সড়ক পথে রং-বেরঙের ফুলের সৌরভ

মীর আসলাম, রাউজান | শনিবার , ২০ জানুয়ারি, ২০২৪ at ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামরাঙামাটি জাতীয় মহাসড়কটির রাউজান অংশের ৮ কিলোমিটার এলাকায় এখন রঙবেরঙের ফুলে সৌরভ, সড়কের মধ্যখানের ডিভাইডারে সারি সারি বিদেশি জাতের খেজুর চারা মাথা উঁচু করে ঢাল ছড়িয়ে দিয়েছে চতুর পাশে। হাটহাজরী থেকে চার লেইনের এই সড়কটি রাউজান ঢালারমুখ পর্যন্ত দৈর্ঘ্য মোট ১৮ দশমিক ৩ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে রাউজান অংশের উন্নয়ন কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সড়কটির উন্নয়ন কাজের সাথে সমন্বয় রেখে সড়ক মধ্যখানের ডিভাইডারে পরিকল্পিতভাবে সৌন্দর্য বর্ধনে কাজ শুরু করেন রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। তিনি শ্রমিক লাগিয়ে সড়ক ডিভাইডারে রোপন করান বিভিন্নজাতের ফুল ও বিদেশি খেজুর চারা। রাউজানে আসা যাওয়ার মধ্যে এসব ফুল ও খেজুর চারার পরিচর্যা খোঁজখবর নেন, মাঝে মধ্যে নিজের হাতেও পরিচর্যা করেন।

সড়ক জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সড়কটি চার লেইন করে উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। ২০২১ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্প কাজের সংশোধনী আসায় দুই দফায় সময় বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে রাউজান অংশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। জাতীয় এই মহাসড়কটির উন্নয়নে এখন ব্যয় হচ্ছে ৬৩৩ কোটি টাকা। উন্নয়ন কাজে নিয়োজিত আছে দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনডিএ ও স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। হাটহাজারী থেকে রাউজান রাবার বাগান (ঢালার মুখ) সড়ক পথের পর্যন্ত ১০টি ব্রিজ, ২৮টি কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। রাউজানের প্রবেশ মুখের হালদা সেতুর সাথে নতুন আরো একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁকগুলোতে দুর্ঘটনারোধে সোজা করা হয়েছে। ৮০ ফুট প্রশস্ত সড়ক পথের রাউজান অংশটি সোজাসোজি ভাবে রয়েছে রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গহিরা সর্তার ঘাট, পশ্চিম গহিরা, গহিরা চৌমুহনী, পূর্ব গহিরা, পশ্চিম সুলতানপুর, জানালী হাট, বেরুলিয়া, মুন্সির ঘাটা, জলিল নগর বাস স্টেশন, বাইন্যা পুকুর, চারা বটতল, ঢালার মুখ, রাউজান রাবার বাগান পর্যন্ত ষ্ট্রিট লাইট স্থাপন করায় রাতে আলো জ্বলমলে থাকছে।

জাতীয় এই মহাসড়কের উন্নয়ন কাজে দফায় দফায় ব্যয় বাড়ানো প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেছেন, সড়ক পথের নিরাপত্তায় প্রকল্প কাজের বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। এতে ব্যয়ও বেড়েছে। তিনি জানান, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ দশমিক ৩৮ হেক্টর বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে ২৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। দুই লেন বিশিষ্ট গার্ডার সেতুর ১০ দশমিক ৯০ মিটার বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে ১৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। চার লেন আরসিসি বক্স কালভার্ট ১০ মিটার বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বেড়েছে ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়া রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণে দশমিক ৯০ কিলোমিটার বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে ১৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল ২০০ মিটার বৃদ্ধিতে খরচ বেড়েছে ৪ কোটি ৭ লাখ টাকা। ইউড্রেন কাম ফুটপাথ ৩ হাজার মিটার বৃদ্ধিতে ব্যয় বেড়েছে ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা। এই সড়কে সাইন পোস্টের সংখ্যা ১১২টি বেড়ে যাওয়ায় ব্যয় বেড়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা এবং কংক্রিট গাইড পোস্টের সংখ্যা ১ হাজার ২২০টি বেড়ে যাওয়ায় খরচ বেড়েছে ৫০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে সড়কটি এখন অনেকাংশে নিরাপদ হয়েছে। রাউজান অংশের সড়ক পথটি শেষ হওয়ায় এখন স্থানীয় সংসদ সদস্য সড়কটিকে নিজের মত করে সাজিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় দারুসসালাম জামে মসজিদে সভা
পরবর্তী নিবন্ধশীতের তীব্রতায় কাঁপছে পাহাড়ের মানুষ