রাউজানে হচ্ছে বিশেষায়িত অটিজম হোম ও বৃদ্ধ নিবাস

সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে : ফজলে করিম

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

রেলপথ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি বলেছেন, একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রত্যেকে যদি স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করি তবেই একটি সুন্দর, সুখী এবং সমৃদ্ধশালী সমাজ গঠন সম্ভব হবে। সমাজে এখনো অনেক ভাল মানুষ আছে। তাদের জন্যই সমাজ এখনো অনেক সুন্দর। অনেক ভাল ভাল কাজ হচ্ছে। অনেক ভাল ও সৃজনশীল কাজের জন্য আমরা চিন্তা করছি। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি রাউজানে একটি বিশেষায়িত অটিজম হোম ও বৃদ্ধ নিবাস করার পরিকল্পনার জন্য মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ জনান। তিনি বলেন, এই অটিজম হোম ও ইনিস্টিটিউটকে দেশে একটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলা হবে। বিশেষায়িত শিশুদের জন্য এখানে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকবে। মা ও শিশু হাসপাতালের রেজাউল করিম আজাদ যখন একটি অটিজম সেন্টার ও বৃদ্ধাশ্রম করার কথা বললেন তখন তাকে আমি এখানে নিয়ে আসি এবং এই জায়গাটি নামজরিসহ মা ও শিশু হাসপাতালের নামে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি। ইতোমধ্যে জায়গায় মাটি ভরাটসহ চারদিকে বাউন্ডারী নির্মাণ করা হয়েছে। আমার আহ্বানে দুইজন দাতা বিনামূল্যে জমি দান করেছেন। বাকী জায়গাও আমরা ক্রয় করে রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি। এখান থেকে কয়েকজনকে সরিয়ে অন্য জায়গায় পুনর্বাসন করিয়ে দিয়েছি।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাউজান পৌরসভা এলাকায় প্রস্তাবিত সায়মা ওয়াজেদ অটিজম হোম এন্ড ইনিস্টিটিউট প্রাঙ্গণে হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর এম এ তাহের খানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক, দৈনিক পূর্বকোণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম কিডনী হাসপাতালের সভাপতি ডা. মাইনুল ইসলাম মাহমুদ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস।

হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. ফাহিম হাসান রেজার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অটিজম বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও অটিজম ও শিশু বিকাশ সাব কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ। প্যানেল এঙপার্ট হিসাবে বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ডা. মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজু, প্রফেসর ডা. পান্না লাল সাহা ও প্রফেসর ডা. চৌধুরী চিরঞ্জীব বড়ুয়া।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন হাসপাতালে কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন। বক্তব্য রাখেন রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হক চৌধুরী বাবুল, হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির জেনারেল সেক্রেটারী মোহাম্মদ রেজাউল করিম আজাদ, সাবেক পরিচালক লে. কর্নেল (অবঃ) নজরুল ইসলাম চৌধুরী, প্রফেসর ডা. মো. আকবর হোসেন, প্রয়াসের প্রিন্সিপাল লে. কর্নেল মাহাবুব মোর্শেদ ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আলমগীর পারভেজ।

প্রধান অতিথি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে তাৎক্ষণিকভাবে এক কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেন। তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান ৫ লক্ষ টাকা, সিটি করর্পোরেশনের৩৯ নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন ১০ লক্ষ টাকা ও স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী ৫ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। কনফিডেন্ট সিমেন্টের পরিচালক লায়ন রুপম কিশোর বড়ুয়াসহ উপস্থিত অনেক ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি উক্ত প্রকল্প বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি আধুনিক রাউজানের উন্নয়নে তাঁর গৃহীত পদক্ষেপ ও কর্মসূচি সমূহ সভায় অবহিত করেন। রাউজানকে তিনি আরো আধুনিক ও আদর্শ উপজেলা হিসাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছেন বলে জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক রাউজানে বিশেষায়িত শিশুদের জন্য এধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে আসায় এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। এম এ মালেক বলেন, আমাদের এমপি সাহেবের বড় গুণ হচ্ছে তিনি কোন কিছু ধরলে সেটা শেষ না করা পর্যন্ত ছাড়েন না, লেগে থাকেন। আমি আশাবাদী যে, তাঁর এই মানবিক উদ্যোগ অবশ্যই সফল হবে। তিনি বলেন, মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে একটি দায়িত্ব দিয়েছেন, ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যন হিসাবে। ইতোমধ্যে আমরা এই ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়নের কাজ অনেকদূর এগিয়ে নিয়েছি। বাংকারসহ ভবন নির্মাণের কাজ ৬তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ক্যান্সার মেশিন অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে এসে পৌঁছাবে। আশা করা যায় আগামী জুলাই ২০২৩ থেকে এখানে রেডিও থেরাপীসহ ক্যান্সারের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। তিনি ক্যান্সার হাসপাতাল বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে হাসপাতালের অটিজম ও শিশু বিকাশ কেন্দ্রে পরিচালক প্রফেসর ডা. মাহমুদ আহমেদ চৌধুরী আরজুকে বিশেষায়িত শিশুদের চিকিৎসাসেবায় অনন্য ভূমিকা রাখায় আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এই লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানে হাসপাতালের কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট আবদুল মান্নান রানা, জয়েন্ট সেক্রেটারী ডা. কামরুন নাহার দস্তগীর, আজিজ নাজিম উদ্দিন, ট্রেজারার অধ্যক্ষ লায়ন ড. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ, জয়েন্ট ট্রেজারার এস এম কুতুব উদ্দিন, অর্গানাইজিং সেক্রেটারী মোহাম্মদ সাগীর, স্পোর্টস এন্ড কাচারাল সেক্রেটারী আলহাজ্ব মোহাম্মদ আহসান উল্যাহ, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. কামরুন নেসা রুনা, খায়েজ আহমেদ ভূঁইয়া, ডা. ফজল করিম বাবুল, হারুন ইউসুফ, এএসএম জাফর, প্রিন্সিপাল এ এস এম মোস্তাক আহমদ, পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. নূরুল হক, দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর, হাসপাতালের অধ্যাপকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ, রাউজান পৌরসভার চেয়ারম্যানসহ অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচার দেশের অনারারি কনসাল এক পরিবারে
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা