রাউজানে মিষ্টি বিতরণ নিয়ে বিএনপির দুইগ্রুপে গোলাগুলি

রাউজান প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী আটক হওয়ার খবরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করার কর্মসূচি পালন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন একজন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালের দিকে দক্ষিণ রাউজানের নোয়াপাড়া পথেরহাটে এই ঘটনা ঘটে। বাজারের লোকজন জানিয়েছেন দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত তারা ৩০/৪০টির মত গুলির শব্দ শুনেছেন।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন থেকে নোয়াপাড়ার দুটি গ্রুপ নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে মরিয়া হয়ে আছে। প্রতিরাতে এলাকায় গুলির শব্দ শোনা যায়। গতকাল উভয় গ্রুপ পথেরহাটে উপস্থিত হলে চরম উত্তজনা দেখা দেয়। উভয় পক্ষ নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে মিষ্টি বিতরণ ও শ্লোগান দিতে গেলে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে মিছিল করতে গেলে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া।

এর মধ্যে চলে গোলাগুলি। শেষ বিকালে একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ যুবক সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত পথেরহাটের পড়ে কাতরাচ্ছিলেন। ঘটনার সময় আতংকিত লোকজনকে বাজার থেকে দিক্বিদিক ছুটোছুটি করতে দেখা যায়। বাজারের সব দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা চলে যান।

এমন পরিস্থিতির মধ্যে কাপ্তাই সড়কে যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। কাপ্তাইমুখী যানবাহন মদুনাঘাটে আর শহরমুখী যানবাহন ব্রাহ্মণহাটের দিকে দাড়িয়ে পড়লে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় জানজট সৃষ্টি হয। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

জানা যায়, বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। শেষের দিকে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে পড়লে দুই গ্রুপ আশেপাশে নিরাপদ অবস্থান চলে যায়। পুলিশের উপস্থিতির মাঝে গুলির ঘটনা না ঘটলেও দুই পক্ষই সতর্ক অবস্থানে আছে রয়েছে বলে জানা যায়। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

এদিকে উপজেলার অন্যান্য এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীরা ফজলে করিম চৌধুরী আটকের সংবাদে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে। নোয়াপাড়া ছাড়া অন্যান্য কোনো এলাকায় তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

পৌরসভার মুন্সিরঘাটা, জলিলনগর, গহিরায়, ফজলে করিমের ফাঁসি দাবি করে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল করেছেন। মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল হয়েছে উরকিরচর, পাহাড়তলী চৌমুহনী, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে।

জানা যায়, পথেরহাটে গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম সুজন দাশ। তিনি বিএনপির একপক্ষের হয়ে সেখানে তৎপর ছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তার বাড়ি নোয়াপাড়ার উভলং গ্রামে। আহতাবস্থায় দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকা সুজনকে উদ্ধার করে পরে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।

নোয়াপাড়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাউজান থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই নাফিজ ইকবাল বলেন, পুলিশ দল ঘটনাস্থলে রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। একজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, রাউজান থানার আগের ওসিকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর থেকে এখনো কাউকে দেয়া হয়নি। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এলাকাবাসী উৎকণ্ঠায় রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকর্মবিরতিতে অচল কক্সবাজার সদর হাসপাতাল, মূল আসামিরা অধরা
পরবর্তী নিবন্ধখালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি ‘পর্যালোচনা’ চলছে : চিকিৎসক