চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার (৯ আগস্ট) বিকালে রাউজান থানায় গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী নাছিম উদ্দিন নামে এক বিএনপি নেতা বাদী হয়ে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ১২৯ জন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।
শনিবার রাত ০৯টায় এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূইয়া। এর আগে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাউজান পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডে সর্তারঘাট এলাকায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার অনুসারীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে গোলাম আকবর খোন্দকারসহ দুপক্ষের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।
উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ও গিয়াস কাদের চৌধুরী পদ স্থগিতদাশে প্রদানের বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক চিঠিতে সাত দিনের মধ্যে দলীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিল।
এর প্রেক্ষিতে গত সোমবার, ০৪ জুলাই তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজীজুল বারী হেলাল রাউজান গিয়ে তদন্ত করেন। সাক্ষাতকার গ্রহণ করেন ঊভয় দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে।
গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুরুল হক বলেন, যেহেতু এটা কেন্দ্র তদন্ত করছে সেহেতু আমরা মামলা করি নাই। আমার জানা মতে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী যে মামলা দিয়েছে সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন। আমরা তদন্তের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যে তদন্ত চলছে তার সম্মানে মামলা করছিনা। দলের উর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে আমরা আমাদের করণীয় নির্ধারণ করবো।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফিরোজ আহমেদ মেম্বর বলেন, ‘খন্দকারের অনুসারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে এখন মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের শাসন আমলেও দীর্ঘ ১৭ বছর হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার কথিত বিএনপি নেতার অনুসারীর মামলার শিকার হচ্ছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। অথচ আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছিলেন, যেহেতু কেন্দ্র থেকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে তদন্ত চলছে সেহেতু আমরা মামলা মোকাদ্দমা করি নাই। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করার ঘটনা দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে মামলার বাদি গোলাম আকবর খন্দকার অনুসারী নাছিম উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন দিয়েও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
তবে গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মামলার বাদী নাসিম উদ্দিন চৌধুরী ঐদিনের ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন। তিনি হাসপাতালে থাকার কারণে মামলা দায়ের করতে সময়ক্ষেপন হয়েছে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইয়া রাত ০৯টায় বলেন, দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আজ (শনিবার) বিকালে নাছিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি ১২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এজাহার দিলে মামলা রুজু করা হয়।