রাউজানে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে একজন গুলিবিদ্ধ, কুপিয়ে জখমসহ ১১জন আহত হয়েছে।
এছাড়া অগ্নিসংযোগ করে পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বুধবার (১৯ মার্চ) বিকালে ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মদন চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ মাঠে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে সন্ধ্যা ৭ টায় নোয়াজিষপুরের ইউসুফ খাঁর দিঘির পার এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এদের মধ্যে যুবদল কর্মী মো. কাইয়ুম (২৮) নামে গোলাম আকবর খন্দকারের এক অনুসারী কপালে গুলিবিদ্ধ এবং প্রতিপক্ষের কোপে গুরুতর আহত হন।
একইসাথে যুবদল নেতা গাজী মোরশেদ নামে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর এক অনুসারী গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কাইয়ুমের কপালে গুলি লাগে এবং কিরিচের কোপে গাজী মোরশেদের ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। বর্তমানে এরা দু’জনই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রয়েছে। দুইজনের অবস্থা বেশ আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
এছাড়া গেলাম আকবর খন্দকারের নেতাকর্মীদের মধ্যে আহতরা হলেন- অর্জুন কুমার নাথ (৪৮), ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নুরুল হুমায়ুন (২৮), যুবদলের সদস্য মো. রিফাত (২৭), যুবদলের সদস্য সচিব মো. সোহেল, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফোরকান সিকদার (৪৪), বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম।
অপরদিকে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে আহত হয়েছেন সেকান্দর, বাদশা ও ফোরকান।
জানা যায়, নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অংগসংগঠনের ব্যানারে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা।
দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে, গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন। দোকান পাট বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা।
গোলাম আকবর খন্দকার গ্রুপের অনুসারী ফোরকান সিকদার বলেন, আমাদের ইফতার মাহফিলে গিয়াস গ্রুপের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। মাওলানা দিদার, চশমা দিদার ও সেলিম আমাদের ৫-৬ জনকে আহত করে। এসময় আমাদের একজন গুলিবিদ্ধ হয়।
অন্যদিকে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীর মধ্যে দিাদারুল আলম ও সেলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন। আমরা চিকদাইর ইউনিয়নে দলীয় ইফতার মাহফিলে যাওয়ার সময় গোলাম আকবর খান্দকারের চিহ্নিত সন্ত্রাসী ফোরকান সিকদার গুলি চালায়। আমরা পালিয়ে রক্ষা পায়। পরে ইফতার মাহফিল শেষ করে নোয়াজিষপুর আসার পথে নোয়াজিষপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় আবারও হামলা চালানো হয়।
তারা ধারালো কিরিচ দিয়ে আমাদের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম এবং আরও তিনজনকে আহত করা হয়। আমাদের ৫টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজনের স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় সুষ্ঠুতদন্ত পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূইঁয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আজাদীকে বলেন, বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিককভাবে জানতে পেরেছি খন্দকার গ্রুপের ইফতার মাহফিল ছিল, সেটিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আহত কাউকে পায়নি। ৩-৪ আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেইনি৷ ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার আলামত পেয়েছে।