রাউজানে বিএডিসির সোলার সেচ প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি উধাও

কৃষকরা ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায়

রাউজান প্রতিনিধি | সোমবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:১১ পূর্বাহ্ণ

রাউজানের নোয়াজিশপুর ইউনিয়নে কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের অধীনে বসানো সোলার প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে গেছে। বিগত ২০১৮১৯ সালে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছিল কৃষকদের পানি সংকট মোকাবেলায়। তখন এই প্রকল্পে ব্যয় করা হয়েছিল প্রায় পৌনে ৩০ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা পাওয়া যেত। উপকারভোগী ছিলেন রাউজান ফটিকছড়ির কৃষিজীবীরা। এই প্রকল্পের সব যন্ত্রপাতি উধাও হয়ে গেলেও এতদিন এলাকার কৃষকরা জানতেন না। ক্ষেতে পানির জন্য যোগাযোগ করা হলে ঘটনা আস্তে আস্তে প্রকাশ পেতে থাকে। সেচ প্রকল্প থেকে পানি সুবিধা না পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। জানা যায়, প্রকল্প কাজ শেষ করে বিএডিসি চুক্তির ভিত্তিতে এটি পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নোয়াজিশপুরের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলমকে। তিনি এটির দায়িত্ব নিয়ে গত বছর পর্যন্ত কৃষকদের ক্ষেতখামারে পানি দিয়ে আসছিলেন টাকার বিনিময়ে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পর এই প্রকল্পে সেচ পাম্পসহ সব যন্ত্রপাতি রাতের আঁধারে খুলে নেয়া হয়। এলাকায় প্রচার করা হয় ওইসব যন্ত্রপাতি চুরি করে নেয়া হয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, প্রকল্পের প্রধান মোটরটি সর্তা খালের পাড়ে একটি পাকা নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে রাখা ছিল। এটি এখন ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশে আছে। কৃষিজমিতে দেয়া পানির প্রবাহ লাইনে দেয়া ছিল কিছু ধাতব যন্ত্র। সেগুলোও উধাও হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক মোহাম্মদ হানিফ বলেছেন, সরকার পতনের পর পর এই প্রকল্প পরিচালনায় দায়িত্বে থাকা আলম মেম্বার সোলার প্যানেলের মোটর খুলে নিয়ে গেছেন বলে তিনি শুনেছেন। এখন পানি সুবিধা না পেয়ে তিনি ও কৃষকরা ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বলে জানান।

ওই মেম্বারের সাথে কথা বললে তিনি প্রকল্পের মোটর খুলে নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর কে বা কারা সোলার প্রকল্পের মোটরসহ সব কিছু চুরি করে নিয়ে গেছে। তার দাবি প্রকল্পের যন্ত্রপাতির সাথে সেখানে তার নিজের আরো দুটি পাম্প মোটর ছিল সেগুলোও চুরি হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে তিনি উপজেলা কৃষি বিভাগ ও থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, ওই প্রকল্পের সাথে তাদের তেমন সংশ্লিষ্টতা নেই। সেটির সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব বিএডিসির। অবশ্য গত বছরের ২৭ আগস্ট মোহাম্মদ আলম নামের একজন তার দপ্তরে প্রকল্পের যন্ত্রপাতির চুরি বিষয়টি লিখিত ভাবে জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান থানার ভরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ওই সময় তিনি দায়িত্বে ছিলেন না। তা ছাড়া তখন দেশে এক অস্থিতিশীল পরিবেশের মধ্যে থানাও আক্রান্ত হয়েছিল। এখন ওই ঘটনা নিয়ে কোনো তথ্য দেয়া মুশকিল। তারপরও তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও চবিতে শিবিরের নতুন কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধহাই কোর্টের এক বেঞ্চ কাগজমুক্ত, বিচারক বললেন ‘নতুন যুগ’