গত আগস্টের শেষে টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে সৃষ্ট বন্যায় রাউজানে ৫০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক হিসাবে এই ক্ষতির পরিমাণ ৬০ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নদীর বাঁধভাঙা স্রোতে বিভিন্ন ইউনিয়নের কাঁচা পাকা রাস্তা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে কিছু কিছু রাস্তা এলাকার লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে চলাচল উপযোগী করার চেষ্টা শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যায় রাস্তাঘাটের সর্বাধিক ক্ষতি হয়েছে হালদা পাড়ের ইউনিয়ন নোয়াপাড়া, পশ্চিম গুজরা, বিনাজুরী ও পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড। অপর দিকে সর্তা–ডাবুয়া খালের পাশে থাকা রাউজান পৌরসভার ৪ ও ৬ নং ওয়ার্ড এবং ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর ও নেয়াজিশপুর ইউনিয়ন সমূহে রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত হয়েছে। সর্তা ও ডাবুয়া হয়ে তীব্র স্রোতে পানি নেমে এসে এসব এলাকার রাস্তাঘাটের উপর দিয়ে গড়িয়েছে।
পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা লিয়াকত আলী বলেন, মগদাই খালের দক্ষিণ পাশের পাকা রাস্তাটির উপর দিয়ে নদীর পানির স্রোত বয়ে যাওয়ায় বিভিন্নস্থানে ধসে গেছে। এলাকাবাসী প্রথম দিকে ধসে যাওয়া রাস্তায় সাঁকো পরবর্তীতে ইটবালু ফেলে কয়েকদিনের স্বেচ্ছাশ্রমে আপাতত চলাচল উপযোগী করা হয়েছে। নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মোকামীপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ বলেন, কমলার দিঘী–কছুখাইন সড়কটির বিভিন্নস্থানে ধসে যাওয়া এলাকার মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে আছে। এসব রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হালদা নদীর জোয়ারের পানির স্রোতে।
কছুখাইন দরবারের শাহজাদা মো. হাসান বলেছেন, ধসে গেছে স্থানীয় কছুখাইন–চৌধুরীহাট সড়কের বিভিন্নস্থানে।
উন্নয়নের আওতায় থাকা এই সড়কটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ফেলে রাখার কারণে বন্যার আগেও মানুষ কষ্টের মধ্যে ছিল। পরবর্তীতে বন্যার পানির স্রোত সড়ক পথে বিভিন্নস্থানে ধস ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। ধসের কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে একই ইউনিয়নের মোকামী পাড়ার বাসিন্দারাও। কমলার দিঘী–কছুখাইন সড়কটির ছামিদর কোয়াং এলাকার ছাত্র–যুবকরা বিধ্বস্ত সড়ক মেরামতের কাজ করছেন।
স্বেচ্ছাশ্রমে নিয়োজিত হাবিবুল্লাহ বলেন, সরকারের দিকে চেয়ে না থেকে জনদুর্ভোগ লাঘবে নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে বিধ্বস্ত রাস্তা সংষ্কারের নেমেছি। রাস্তার বিভিন্নস্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় এলাকার হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে রয়েছে।
বিধ্বস্ত রাস্তার বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর মাঠ পর্যায়ে ঘুরে ৫০ কিলোমিটার সড়ক পথ ক্ষতিগ্রস্ত হিসাবে আমরা পেয়েছি।
বিধ্বস্ত সড়কের তালিকা উর্ধ্বতন মহলে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি ছাড়পত্র পেলে দ্রুততার সাথে আমরা সড়কগুলো সংষ্কার কাজে হাত দিতে পারব। ক্ষয়ক্ষতি আর্থিক হিসাবে ৬০ কোটি বলে তিনি জানান।