রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা খায়েজ আহমদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল অস্ত্র, গুলি ও মাদক উদ্ধার করেছে র্যাব–৭। গত বুধবার দিবাগত গভীর রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বাড়ি থেকে সাবেক চেয়ারম্যান খায়েজ আহমদের ছেলে মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন (৪৯) ও তার চাচাতো ভাই শফি আহমদের ছেলে সোহেল (৩০)কে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ওই বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব–৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রশিক্ষিত ডগ স্কোয়াড নিয়ে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৯টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, ১৫টি কার্তুজ, ৪টি চাইনিজ কুড়াল, ৮টি রামদা, ১০টি চাপাতি, ৬টি ছুরি, ৩টি করাত, ৩টি হাতুড়ি, ৯টি হকিস্টিক, এক বোতল বিদেশি মদ, ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় বাড়ি থেকে চেয়ারম্যানের ছেলে মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন ও তার চাচাতো ভাই শফি আহমদের ছেলে সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান অব্যাহত থাকবে জানিয়ে সন্ত্রাস নির্মূল করার জন্য যেখানে যতটুকু কঠোর হওয়া প্রয়োজন আমরা ততটুকু কঠোর হব। কামালের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে, যদিও বা তিনি জামিনে আছে। নতুন মামলায় তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। কী কাজে অস্ত্রগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অধিনায়ক বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্রগুলোর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। তাই ধারণা করা হচ্ছে অবৈধ কাজে ব্যবহার করার জন্যই রাখা হয়েছে। রাউজানে হত্যাকাণ্ডে এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হলেও উদ্ধারকৃত অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে কি–না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ রাউজানে দল উপদলে বিভক্ত বিএনপির কিছু নেতাকর্মী। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন গ্রেপ্তার চেয়ারম্যানের ছেলে কামাল। তিনি প্রায় সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির নানা তথ্য উপস্থাপন করতেন। সন্ত্রাস–চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আহ্বান জানাতেন এলাকাবাসী ও নোয়াপাড়া পথেরহাটের ব্যবসায়ীদের। নিজকে দাবি করতেন বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী হিসাবে। চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে র্যাবের এত অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার করার ঘটনায় এলাকার মানুষ বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন। রাউজান থানা সূত্রে জানা যায়, অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র, নানা জিনিষপত্রসহ গ্রেপ্তার দুইজনকে র্যাব থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের গতকাল অস্ত্র ও মাদক মামলায় আদালতে মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।












