রাউজানের পূর্বগুজরা ইউনিয়নের উত্তর গুজরা গ্রামে দীপঙ্কর বিশ্ব (৩৫) নামের কাগতিয়া বাজারের (বিনাজুরি) এক কাপড় ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় চমেক হাসপাতালে। রাতে সেখানে তিনি মারা যান। দুই সন্তানের জনক দীপঙ্কর উত্তর গুজরার রাধা মোহন বিশ্বের বাড়ির অজিত বিশ্বের ছেলে।
কাগতিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দীপঙ্কর ঋণের চাপে অস্থিরতার মধ্যে ছিলেন। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন প্রতিমাসে ২০ হাজার টাকা করে সুদ দেয়ার চুক্তিতে। এর বাইরে ঋণ নিয়েছিলেন ‘পদক্ষেপ’ নামের একটি এনজিও সংস্থার কাছ থেকেও। সম্প্রতি ওই সংস্থার এক নারী কর্মী সাপ্তাহিক কিস্তির টাকা আদায় করতে এসে কিস্তি পরিশোধে গড়িমসি করায় তাকে ভর্ৎসনা করেন। আয়ের সঙ্গে দেনার হিসাব মিলাতে পারছিলেন না দীপঙ্কর। এমন পরিস্থিতির মধ্যে মানসিক অশান্তি ও ঋণের চাপে অস্থিরতার মাঝে সোমবার দিনে দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান।
জানা যায়, হতাশাগ্রস্ত এই দোকানি সন্ধ্যার আগে রমজান আলী হাটে গিয়ে কীটনাশক কিনে নিয়েছিলেন। বাড়িতে এসে সেই কীটনাশক পান করেন। পাড়ার লোকজন বলেছেন, বিষপানের সময় তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন না। তারা একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়িতে ফিরে দেখতে পান বিষক্রিয়ায় দীপঙ্কর ঘরের মেঝেতে কাতরাচ্ছেন। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।
ঋণদাতা স্থানীয় ওই ব্যক্তি বলেন, আমি তাকে কোনো সময় টাকা পরিশোধের জন্য চাপ প্রয়োগ করিনি। সুদ দেয়ার শর্তে ছয় লাখ টাকা ঋণ দেয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি এই পর্যন্ত কত টাকা আদায় করেছেন তা পরিষ্কার করেননি। ঋণদাতা এনজিও সংস্থার রাউজান শাখার ম্যানেজার আবদুস সত্তার বলেন, ২০১৫ সাল থেকে দীপঙ্কর তার প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে আসছিলেন। এখন তাকে প্রতি সপ্তাহে ১২ হাজার ৯৫০ টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। তার নারী কর্মী ঋণগ্রহীতাকে অপমান করার যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের হাসপাতালে মারা যাওয়ায় সেখানকার পুলিশ তার ময়নাতদন্ত করে লাশ পরিবারের হাতে হস্তান্তর করবে।