রাউজানে এবার ব্যাপক হারে সরিষা চাষ হয়েছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার বাম্পার ফলনে পাওয়া গেছে ১২শ মেট্রিক টন সরিষা।
জানা যায়, সরকারের দেয়া প্রণোদনায় উন্নত জাতের বীজ ও সার পেয়ে কৃষকরা উৎসাহ উদ্দীপনায় সরিষা চাষাবাদে মাঠে নেমে এই সফলতা পেয়েছেন। বর্তমান বাজারে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতায় তেল জাতীয় এই ফসল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকেছে রাউজানের কৃষকরা। চিকদাইর ইউনিয়নের সর্বাধিক জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান প্রিয়োতোষ চৌধুরী বলেন, কৃষকরা গত কয়েক বছর ধরে বোরো চাষে নামছেন না লোকসানের ভয়ে। শত শত একর জমি পড়েছিল অনাবাদি হয়ে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কৃষকদের কৃষিকাজে উৎসাহিত করতে সভা সমাবেশ করে তাদের খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করেন। তিনি চাষাবাদের সুবিধার্থে আধুনিক কৃষি সরঞ্জামসহ নানা ধরনের সুবিধা দিয়েছেন। কৃষি বিভাগ থেকেও কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনার কর্মসূচিতে উন্নত জাতের বীজ সার দিয়েছে। এতে কৃষকরা অনুপ্রাণিত হয়ে মাঠে নেমে সুফল পেয়েছেন। স্থানীয় কৃষক নুরুল আলম বলেন, রাউজানের কৃষকরা বিভিন্নমুখী সহায়তা পেয়েছেন সরিষা চাষে। এবারের ফলন দেখে চাষিরা বেশ খুশি।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যানুসারে, চিকদাইর ইউনিয়নের ১৩০ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের দেয়া হয়েছে ১৪, ১৫, ১৭, ১৮ ও বিনা সরিষা ৪, ৯১১ টরি–৭ জাতের সরিষার বীজ। কৃষকরা মাঠ পর্যায়ে থাকা কৃষি কর্মকর্তাদের নিদেশনা মেনে চাষাবাদ করায় তারা বাম্পার ফলন পেয়েছে। সরকারিভাবে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে প্রণোদনার বীজ ও সার। এর বাইরে সাধারণ কৃষকদের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের প্রদর্শনী মাঠ করেছে ২০টি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুম কবির বলেন, এবার রাউজানে ৭৫০ হেক্টর জমির সরিষা ক্ষেতে বাম্পার ফলন পাওয়া গেছে। তার দপ্তরের হিসাব অনুসারে এবার রাউজানে পাওয়া গেছে ১২০০ মেট্রিক টন সরিষা। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২ কোটি টাকা। উৎপাদিত সরিষা প্রক্রিয়াজাত করে পাওয়া যাবে চার লাখ লিটার তেল। এছাড়া সরিষার উচ্ছিষ্ট থেকে সৃষ্ট খৈল পাওয়া যাবে ৩৬০ মেট্রিক টন। যা গবাদী পশু ও মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় আট লাখ টাকার মত।