রাউজানের সাবেক এমপি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি। বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলছেন, চিকিৎসার কথা বলে ‘অবৈধভাবে’ ভারতে যাওয়ার চেষ্টার সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে ফজলে করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়।
২৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের (সরাইল) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফারাহ মো. ইমতিয়াজ বলেন, ফকিরমোড়া বিওপির টহলদল আখাউড়া সীমান্তের আব্দুল্লাহপুর এলাকা থেকে ফজলে করিম চৌধুরীসহ তিনজনকে আটক করে। তারা অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। আটক বাকিরা হলেন– আখাউড়ার নূরপুর এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. হান্নান মোল্লা এবং আখাউড়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য মো. নাঈম চৌধুরী। খবর বিডিনিউজের।
এদিকে ফজলে করিম চৌধুরীকে অবৈধভাবে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য সহায়তা করেছিলেন মো. হান্নান মোল্লা ও মো. নাঈম চৌধুরী নামের দুই ব্যক্তি। আটক নাঈম মানব পাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। বিজিবির হাতে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম নিজেই।
সেই তথ্য জানিয়ে বিজিবি সদর দপ্তর থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে বিজিবির জিজ্ঞাসাবাদে সাবেক সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, মানব পাচারকারী মো. নাঈম ভারতে প্রবেশ করিয়ে দেবে বলে ফজলে করিমকে মোবাইল ফোনে জানায়। তখন তিনি ঢাকা হতে বাসযোগে আখাউড়ায় আসেন। সাবেক মেম্বার হান্নান মোল্লার সহযোগিতায় ও মানব পাচারকারী নাঈমের মাধ্যমে এই সাবেক সংসদ অবৈধভাবে ভারতে যাচ্ছিল। চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছিলেন বলে বিজিবিকে অবহিত করেন তিনি।
আটকের সময় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিমের কাছ থেকে বাংলাদেশি লাল পাসপোর্ট ১টি, নগদ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা, মোবাইল ফোন ২টি (আইফোন– ১টি এবং রিয়ালমি–১টি), জাতীয় পরিচয়পত্র– ২টি (স্মার্ট ও পুরাতন) এবং ছবি ও ওষুধসহ অন্যান্য কাগজপত্র পাওয়া যায়। এছাড়া সহযোগী সাবেক মেম্বার হান্নান মোল্লার কাছ হতে মোবাইল ফোন ২টি, নগদ ২ হাজার ৩৯০ টাকা এবং মানব পাচারকারী নাঈমের কাছে একটি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৩০ টাকা পাওয়া যায়। সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক মেম্বার এবং মানব পাচারকারীকে আখাউড়া থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম–৬ আসন থেকে টানা পঞ্চমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে করিম চৌধুরী। গত ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন ফজলে করিম। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ও রাউজানে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে।