রাউজানের বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম (৫২) হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা ছিল ভাড়াটে খুনি। হাকিমের দখল থেকে কর্ণফুলী নদীর পাড়ের বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে ও স্থানীয়ভাবে তার রাজনৈতিক প্রভাব ও আধিপত্য বিস্তার বন্ধ করতে নেপথ্যে থাকা খুনের পরিকল্পনাকারী তাকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যা করে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে খুনের ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়, গত ৭ অক্টোবর আবদুল হাকিম প্রাইভেটকারে নগর থেকে তার গ্রাম রাউজানের বাগোয়ানের হামিম অ্যাগ্রো ফার্মে যান। বিকেলে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট ব্রিজের পশ্চিম পাশে পৌঁছালে একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে তার গাড়ির সামনে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে আবদুল হাকিমের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তার গাড়িচালকও গুলিবিদ্ধ হন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের সূত্র ধরে ৩১ অক্টোবর রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের গরীব উল্লাহপাড়া এলাকা থেকে মো. আবদুল্লাহ খোকনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হাকিম হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন। ১ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে জবানবন্দি দেন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকা মো. মারুফ নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ আরো জানায়, গ্রেপ্তার করা দুই আসামির তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মো. সাকলাইন হোসেন নামের আরো একজনকে। পরে তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত দেশি তৈরি একনলা বন্দুক, একটি এলজি ও একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। একই দিন জিয়াউর রহমান নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ চারজনের তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে আরও ১০ থেকে ১২ জন জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, উক্ত হত্যাকাণ্ডসহ চট্টগ্রাম জেলার সকল ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় নোয়াপাড়া, চৌধুরীহাট ও আশপাশের এলাকায় চেকপোস্ট, পুলিশি টহল, বিশেষ অভিযান এবং রাত্রীকালীন সাঁড়াশি তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলা এলাকায় আইন–শৃঙ্খলা রক্ষা, সকল প্রকার সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।












