এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। ইতোমধ্যে যারা করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন তাদের অধিকাংশের দ্বিতীয় ডোজের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে রমজান মাসে। ফলে রমজানে দিনের বেলায় রোজা রেখে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ নিয়ে এক ধরনের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তাই এক্ষেত্রে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্পষ্ট ব্যাখা চেয়েছেন টিকা গ্রহীতারা। নয়তো তারা টিকা প্রদান কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন।
সূত্র জানিয়েছে, বিশ্বের বহু দেশের আগে বাংলাদেশ করোনা টিকা প্রদান করছে। শুরুতে টিকা নিয়ে কিছুটা ভীতি ও অপপ্রচার থাকলেও তা পুরোপুরি কেটে গেছে। দেশের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে টিকা নিচ্ছে। এক্ষেত্রে চাপ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে আপাতত টিকার নিবন্ধন বন্ধ রাখতে হয়েছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে রেশনিং করে টিকা গ্রহণে আসা লোকজনের ভিড় সামলাতে হচ্ছে। শহরের মানুষ গ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে টিকা দিচ্ছেন।
শুরুতে বলা হয়েছিল এখন যারা টিকা নিচ্ছেন তাদেরকে চার সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান করা হবে। এভাবে আগামী মার্চ মাসের ১২ তারিখ থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার তারিখও দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু করোনা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেরি করে দেয়া হলে তার কার্যকারিতা বেশি হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চার সপ্তাহ নয়; বরং আট সপ্তাহ পরই দেয়া হবে ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ইতোমধ্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রদান শুরু হবে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে। আর তখনি (১৩ কিংবা ১৪ এপ্রিল) রমজান শুরু হবে। ফলে রমজানে টিকা দেয়ার কার্যক্রম কতটুকু সফল হবে তা নিয়ে সংশয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
গতকাল চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে আমরা কিছুটা শঙ্কিত। বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত দেশে বেশিরভাগ মানুষই রোজা রাখেন। আর রোজা রেখে ইনজেকশন নেয়া থেকে তারা বিরত থাকেন। এক্ষেত্রে ইসলামিত ফাউন্ডেশন বা সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত টিকার ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। ডাক্তার কিংবা টিকা প্রদানকারীদের কোনো বক্তব্যও সাধারণ মানুষ গ্রহণ না করার আশঙ্কা রয়েছে। এক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য মুফতির ফতোয়া ছাড়া সাধারণ মানুষ টিকাগ্রহণে উৎসাহিত হবে না বলে ধারণা করছি।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডাক্তার সেখ ফজলে রাব্বির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দ্বিতীয় ডোজ সময়মতো দিতেই হবে। এটি না দিলে টিকার কার্যকারিতা থাকবে না। রোজার ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে আলেমদের সাথে পরামর্শ করা হবে। এরপর একটি ঘোষণা আসতে পারে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কাজ করা হচ্ছে। নিশ্চয় এই ব্যাপারে সরকারি একটি ঘোষণা আসবে। তবে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।