রমজানের জন্য অ্যাকশন প্ল্যান

গ্যাসের অভাব থাকবে না : কেজিডিসিএল ।। কোনো লোডশেডিং হবে না : পিডিবি ।। দুয়ারে পৌঁছে যাবে পানি : ওয়াসার এমডি ।। ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রিত থাকবে : সিএমপি

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

দুয়ারে কড়া নাড়ছে রমজান। আর মাত্র দিনকয়েক পরেই শুরু হচ্ছে রমজান, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের সিয়াম সাধনার মাস। রমজানকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সেবা খাতগুলোর কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দাবি করে বলেছেন, ইতোমধ্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে।

অপরদিকে ভয়াবহ হয়ে ওঠা নগরীর যানজট পরিস্থিতি রমজানে সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন এবং দ্রব্যমূল্য সহনীয় এবং ভেজাল প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। শুধু বাজার মনিটরিংয়ই নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণেও নেয়া হবে বিশেষ পদক্ষেপ। সরকারি একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা বাজারের ওপর কঠোর নজরদারি করবে। বিশেষ করে আমদানি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারটিকে পুঁজি করে কেউ যাতে কোনোভাবে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেদিকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তৎপরতা শুরু করেছে।

সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করেও গ্যাসের আকাল ঘুচানো কষ্টকর হয়ে উঠছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ায় রান্নাঘরের চুলা জ্বলে না। এলএনজি সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্যাস নির্ভর কর্মকান্ড ব্যাহত হয়েছে। গ্যাসের অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে, কমে গেছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও। গ্যাস সংকট থেকেই বিদ্যুৎ এবং বিদ্যুতের অভাব থেকে পানির সংকট প্রকট হয়ে উঠে। গ্যাসের অভাবে রান্নাবান্নার সমস্যার পাশাপাশি বিদ্যুৎ এবং পানির সংকটে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।

তবে এবার রমজানে পরিস্থিতি ভিন্ন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা। গতকাল দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে তারা বলেছেন, এলএনজি আমদানি কমে যাওয়ায় আমরা বেশ সংকটে আছি। তবে রমজানে এই সংকট যাতে প্রকট হয়ে না উঠে সেদিকে আমরা সতর্ক রয়েছি। এলএনজি আমদানি আগের চেয়ে বেড়েছে বলে উল্লেখ করে তারা বলেন, রমজানে গ্যাসের কোনো অভাব হবে না। গ্যাস নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুরোদমে চালু করা না হলেও বেসরকারি খাতের কেন্দ্রগুলো থেকে বিদ্যুতের যোগান আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পিডিবির দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। আসন্ন রমজানে ইফতার সেহেরি এবং তারাবিতে যাতে বিদ্যুতের কোনো সংকট না হয় সেদিকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকা হবে। চট্টগ্রামে বিদ্যুতের পরিস্থিতি বর্তমানে বেশ সন্তোষজনক বলেও তারা উল্লেখ করেন।

চট্টগ্রামে পানির কোন অভাবই নেই বলে মন্তব্য করে ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, আমাদের পানির উৎপাদন বেড়েছে। লাইন বেড়েছে। আমরা লাইন সংস্কার করেছি। নতুন একটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ট্রায়াল রান চলছে। আমাদের পানি উদ্বৃত্ত হবে। কোথাও অভাব থাকবে না। তিনি জানিয়েছেন, শহরের কোথাও পানির কোনো অভাব নেই। রমজানে তো অভাব হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে কিছুটা অস্বস্তিতে থাকার কথা স্বীকার করে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সবজির দাম খুবই কম। তবে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম নিয়ে মানুষের কষ্ট রয়েছে। তবে এই দাম যাতে আর না বাড়ে, বিশেষ করে রমজানে নিত্যপণ্য তেল চিনি ছোলাসহ প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করছে।

চট্টগ্রাম মহানগরী পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন কর্মকর্তা দৈনিক আজাদীকে বলেন, রমজানে যানজট নিরসনে পুলিশ এখন থেকে কাজ শুরু করেছে।

সবকিছু মিলে দুয়ারে কড়া নাড়ছে রমজান। আর রমজানে মানুষের ভোগান্তি কমানোর সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকার্ডের মাধ্যমে ওএমএসের পণ্য বিক্রির নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
পরবর্তী নিবন্ধআসামির যাবজ্জীবন