রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হকের চিরবিদায়

আজাদী ডেস্ক | সোমবার , ১২ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী মিতা হক করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত জটিলতায় মারা গেছেন। ঢাকার বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার সকাল ৬টা ২০ মিনিটে তার মৃত্যু হয় বলে জানান তার জামাতা মোস্তাফিজ শাহীন।
একুশে পদকজয়ী এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী। শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে রবীন্দ্র-চর্চা এবং রবীন্দ্রসংগীতকে সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তার প্রচেষ্টা মানুষ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। মিতা হকের মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোকবার্তায় তিনি প্রয়াত শিল্পীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। খবর বিডিনিউজের।
মিতা হক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। চার দিন আগে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল বলে জানান মোস্তাফিজ শাহীন। তিনি বলেন, কাল দুপুরে উনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আরও অবনতি ঘটলে রাতে আইসিইউতে ভেল্টিনেশনে রাখা হয়েছিল। সকালে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলানিউজ জানায়, গতকাল বাদ জোহর কেরানীগঞ্জ তারানগর ইউনিয়নের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা ও মায়ের কবরের মাঝে তাকে দাফন করা হয়। এর আগে সেখানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গুণী এই সংগীতশিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর ছায়ানট ভবনে। সেখানে তাকে শেষ বিদায় জানাতে ছুটে যান সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকে।
প্রয়াত অভিনেতা ও নির্দেশক খালেদ খান ছিলেন মিতা হকের স্বামী। খালেদ খান ও মিতা হক দম্পতির একমাত্র সন্তান ফারহিন খান জয়িতাও একজন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী। সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২০ সালে মিতা হককে একুশে পদক দেয় সরকার। ২০১৬ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি।
১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন মিতা হক। চাচা রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন ও উস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খানের কাছে গান শিখেছেন তিনি। ১৯৯০ সালে প্রকাশ হয়েছে তার প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমার মন মানে না’। এরপর বাংলাদেশ ও ভারত থেকে মোট ২৪টি অ্যালবাম প্রকাশ হয়।
তিনি সুরতীর্থ নামে তিনি একটি গানের স্কুল পরিচালনা করতেন। পাশাপাশি ছায়ানট সংগীত বিদ্যায়তনের রবীন্দ্র সংগীত বিভাগের প্রধান হিসেবেও কাজ করেছেন। রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন পরিষদের সহসভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন এ শিল্পী।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রথম একজন নারীকে নভোচারী প্রশিক্ষণে পাঠাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত
পরবর্তী নিবন্ধকরোনাভাইরাস সংক্রমণের নয়া উপসর্গ