রপ্তানি বাণিজ্যে গতি বাড়াবে অনলাইনে ইজিএম দাখিল

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:১০ পূর্বাহ্ণ

ডিজিটালাইজড হয়ে যাচ্ছে দেশের রপ্তানি কার্যক্রম। অনলাইনে বিল অব এন্ট্রি থেকে শুরু করে কন্টেনারের যাবতীয় তথ্য সম্বলিত এক্সপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্ট (ইজিএম) দাখিল শুরু হয়েছে। দেশের বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে ইজিএম-এর যাবতীয় তথ্য শিপিং এজেন্টের কম্পিউটার ঘুরে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারের হাতে পৌঁছতে আট দশদিনের স্থলে এখন মাত্র আট দশ ঘণ্টা সময় লাগছে। এতে করে দেশের রপ্তানি কার্যক্রমে অভাবনীয় গতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে দেশের ১৯টি বেসরকারি আইসিডিই অনলাইনে ইজিএম জমা দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের শতভাগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয় বেসরকারি আইসিডির মাধ্যমে। রপ্তানিকারকদের পণ্য বেসরকারি আইসিডিগুলো থেকে জাহাজিকরণের জন্য বন্দরে পাঠানো হয়। আইসিডি থেকে প্রতিটি কন্টেনারই বন্দরে জাহাজিকরণের জন্য পাঠানোর আগে কি পণ্য, কি পরিমান, কত নম্বর কন্টেনারে বোঝাই করা হয়েছে তার একটি বিস্তারিত বিবরণ সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্ট থেকে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার হয়ে কাস্টমস হয়ে বন্দরে পৌঁছে। এঙপোর্ট জেনারেল মেনিফেস্ট বা ইজিএম নামের এই কাগজটি ডিপো থেকে শিপিং এজেন্ট হয়ে বন্দরে পৌঁছতে আট থেকে দশদিনও লেগে যেতো। এতে রপ্তানি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হতো। তৈরি হতো নানা সংকট। তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশে নানা কিছু অনলাইনে হলেও ইজিএম দাখিলের ব্যাপারটি অনলাইনে হতো না। এটি এক অফিস থেকে অন্য অফিসে টেবিলে টেবিলে ঘুরতো। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়ায় পণ্য রপ্তানির কার্যক্রম চলে আসছিল।
অবশেষে ইজিএম দাখিলের প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন করার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বেসরকারি আইসিডি থেকে রপ্তানির যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্টকে পাঠানো হচ্ছে। সেটি অনলাইনের মাধ্যমেই কাস্টমসে দাখিল হয়ে বন্দর পর্যন্ত পৌঁছার পুরো প্রক্রিয়াটি দিনে দিনেই সম্পন্ন হচ্ছে। আগে যেখানে ৮ থেকে ১০দিন সময় লাগতো এখন সেখানে সর্বোচ্চ একদিনের মধ্যে পণ্যের ইজিএম দাখিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে বলেও সূত্র জানিয়েছে। ইচ্ছে করলে মাত্র আট দশ মিনিটেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে। দেশের ১৯টি বেসরকারি আইসিডির অধিকাংশটিতেই অনলাইনে ইজিএম দাখিলের কার্যক্রম চলে। মাত্র দুয়েকটি আইসিডি কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশের ১৯টি আইসিডিই অনলাইনে ইজিএম দাখিলের কার্যক্রম চালাবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ১৯৯০ সালের দিকে বেসরকারি আইসিডি প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত আইসিডিগুলোতে শুধুমাত্র খালি কন্টেনার রাখার অনুমোদন ছিল। ২০০১ সালের পর আইসিডিগুলোতে রপ্তানি পণ্যবোঝাই কন্টেনার রাখা শুরু হয়। পরবর্তীতে ক্রমে আমদানি পণ্য বোঝাই পণ্য হ্যান্ডলিং করছে বেসরকারি ১৯টি আইসিডি। বর্তমানে রপ্তানি পণ্য বোঝাই ৯৪ শতাংশ কন্টেনার বেসরকারি আইসিডিতে হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে। একই সাথে হ্যান্ডলিং করা হচ্ছে ৩৮ ধরনের আমদানি পণ্য।
ইজিএম অনলাইনে দাখিল করা প্রসঙ্গে বেসরকারি আইসিডিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) সচিব রুহুল আমিন সিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশের একটি ডিজিটাল উদ্যোগ। এরফলে দেশের রপ্তানি বাণিজ্যের কার্যক্রমে বড় ধরনের গতিশীলতা তৈরি হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে আবার পর্যালোচনা
পরবর্তী নিবন্ধহালিশহরে গৃহায়ণের দেড় কোটি টাকার প্লট নিয়ে জালিয়াতি