রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে তৈরি পোশাক বৈচিত্র্যকরণের বিকল্প নেই

চট্টগ্রাম চেম্বারে ইতালির রাষ্ট্রদূত

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো বলেছেন, ইউরোপিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয় ইতালি। গত বছর ইতালিবাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পার করেছে। বাংলাদেশের ৭ম রপ্তানি বাণিজ্য কেন্দ্র ইতালি। বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে প্রচুর তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়। ভবিষ্যৎ বাজার চাহিদা অনুযায়ী রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে তৈরি পোশাক বৈচিত্র্যকরণের বিকল্প নেই। গতকাল বুধবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে সহসভাপতি রাইসা মাহবুব, ইতালীর অনারারি কনস্যুল মীর্জা সালমান ইস্পাহানী, তুরস্কের অনারারী কনস্যুল জেনারেল সালাহ্‌উদ্দীন কাসেম খান, চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, মো. রকিবুর রহমান (টুটুল), মাহফুজুল হক শাহ, মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, ওমর মুক্তাদির, মেট্রোপলিটন চেম্বার সহসভাপতি এ. এম. মাহবুব চৌধুরী, বিকেএমইএ’র পরিচালক আহমেদ নুর ফয়সাল, শিপিং এজেন্ট এসো’র পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান, মেরিডিয়ান গ্রুপের পরিচালক আকিব কামাল, বাংলাদেশকোরিয়া ট্রেনিং সেন্টারের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার নুরুজ্জামান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোরশেদুল হক, ইউরো এক্সিম ব্যাংক, বিএসআরএম গ্রুপ ও ব্র্যাক প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ২ লক্ষ জনশক্তি ইতালিতে সুনামের সাথে কাজ করে গত বছর প্রায় ১.২ বিলিয়ন ইউরো রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ইতালিতে আরো দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। ভবিষ্যতেও বৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি আমদানি করা হবে। এক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে যৌথভাবে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার এবং ম্যানেজমেন্ট এডুকেশন সেন্টার করা যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ইতালি একটি পরিবেশবান্ধব দেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জি২০ সম্মেলনে বায়োফুয়েল ইনিশিয়েটিভ এ স্বাক্ষর করেন। ফলে বাংলাদেশে বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরী হবে। এক্ষেত্রে ইতালি বর্জ্য থেকে জ্বালানি উৎপাদনে কারিগরি সহায়তা প্রদানে আগ্রহী। রাষ্ট্রদূত ইতালিয়ান ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের ফুড প্রসেসিং, মেশিনারীজ, আইসিটি, শিপবিল্ডিং এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা উল্লেখ করেন।

চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, ইতালিতে রপ্তানিকৃত বাংলাদেশী পণ্যের অধিকাংশই তৈরি পোশাক। তাই রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফল, মিঠা পানির মাছ, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্লাষ্টিক খেলনা এবং বাইসাইকেল ইত্যাদি আমদানির জন্য আহবান জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে চট্টগ্রাম অঞ্চল বিনিয়োগের আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হতে যাচ্ছে। তিনি চট্টগ্রামের ভৌগোলিক সুবিধা ও বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বিনিয়োগের প্রদত্ত বিভিন্ন সুবিধা ব্যবহার করে চট্টগ্রামে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে ইতালিয়ান ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগে রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে আহবান জানান। এছাড়া বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তীতে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া ন্যায় ইতালিসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলো যাতে কোটামুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখে সেজন্য রাষ্ট্রদূতের সহায়তা কামনা করেন। একই সাথে ২০৪১ সালের মধ্যে মোট জ্বালানী চাহিদার ৪০% পরিবেশবান্ধব নবায়নযোগ্য জ্বালানীর মাধ্যমে মেটানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন শিল্প কারখানায় রুফটপ সোলার স্থাপনে বিনিয়োগ করছে শিল্প মালিকরা। এক্ষেত্রে ইতালি বিনিয়োগকারীদের এ সেক্টরে বিনিয়োগের আহবান জানান চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ।

চেম্বার সহসভাপতি রাইসা মাহবুব বলেন, বাংলাদেশের পোশাক খাতে ইতালিয়ান মেশিনারীজের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে এবং ইতালি থেকে আমদানিকৃত পণ্যের সিংহভাগই বিভিন্ন খাত ও শিল্পের মেশিনারীজ। তাই ইতালির রপ্তানিকৃত মেশিনারীজ এর জন্য সার্ভিস সেন্টার স্থাপন এবং মেরামত ও পরিচালনার জন্য অপারটেরদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে যৌথ ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের আহবান জানান তিনি।

অন্যান্যদের মধ্যে ফিলিপাইনের অনারারী কনসাল এম. . আউয়াল, চেম্বার পরিচালক এ. কে. এম. আক্‌তার হোসেন, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ও আখতার উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমহানবী (দ.) এর আদর্শ আমাদের অনুসরণ করতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধচান্দগাঁও থানা সেই দুই এএসআই প্রত্যাহার