রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে এক হাজার কোটি টাকার একটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহক পর্যায়ে এই তহবিলের ঋণের সুদের হার হবে ৫ থেকে ৬ শতাংশ। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক রেটের চেয়ে ১ শতাংশ কম সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে তার সঙ্গে ২ থেকে ৩ শতাংশ যোগ করে গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণ করবে। তিন থেকে ১০ বছরের জন্য এই তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা। রোববার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, সরকারের রূপকল্প ২০২১ ও ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ, ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজিএস) অর্জন এবং রূপকল্প ২০৪০ অনুযায়ী দেশকে উন্নত দেশে উন্নীত করতে হলে মাথাপিছু রপ্তানি আয় এবং জিডিপিতে (অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি) মোট রপ্তানির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের বিকল্প নেই। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা ও টেকসই অধিকতর বৃদ্ধিকল্পে পরিবেশ বান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া, জ্বালানি সাশ্রয় ও দক্ষতা, কর্মপরিবেশ উন্নয়নে এবং উৎপাদন যন্ত্রপাতি মেশিনারিজ ও প্রযুক্তির আধুনিকায়নের প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয় নীতিমালায়। ‘এ প্রেক্ষাপটে রপ্তানি নীতি-২১ এর আলোকে রপ্তানিমুখী শিল্প খাতের আধুনিকায়ন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধনকল্পে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক টেকনোলজি ডেভেলপমেন্ট/ আপগ্রেডেশন ফান্ড নামের এক হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছে।’ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিজস্ব অর্থে এই তহবিল গঠন করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের। রপ্তানিনীতি ২০১৮-২৩ এর আওতাধীন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত এবং বিশেষ উন্নয়নমূলক খাতের উদ্যোক্তারা এই তহবিল থেকে ঋণ পাবেন বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। বর্তমানে নীতি নির্ধারণী সুদের হার বা ব্যাংক রেট ৪ শতাংশ। গত বছরের ৩০ জুলাই ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে তা ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এ হিসাবে পাঁচ বছরের কম মেয়াদি ঋণের জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ৪ শতাংশের চেয়ে ১ শতাংশ কম অর্থাৎ ৩ শতাংশ সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই তহবিল থেকে ঋণ নেবে।
গ্রাহকদের মধ্যে বিতরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ যোগ করতে হবে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে গ্রাহকের সুদহার হবে ৫ শতাংশ। পাঁচ থেকে আট বছরের কম মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদের হার হবে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ (৩ শতাংশ + ২.৫০ শতাংশ)। আর আট বছর থেকে দশ বছরের ঋণের ক্ষেত্রে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সুদের হার হবে ৬ শতাংশ (৩ শতাংশ + ৩ শতাংশ)।