রনিল বিক্রমাসিংহের দিকে ঘুরে গেছে শ্রীলঙ্কানদের ক্ষোভ

| শুক্রবার , ১৫ জুলাই, ২০২২ at ৯:৪৯ পূর্বাহ্ণ

গোটাবায়া রাজাপাকসে প্রতিবেশি মালদ্বীপে পালিয়ে যাওয়ার পর শ্রীলঙ্কানদের ক্ষোভ ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহের দিকে ঘুরে গেছে। শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার মধ্যেই বুধবার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে রনিলের নাম ঘোষণা করা হয়। তবে রাজনৈতিক ডামাডোলের মধ্যে ক্ষমতার চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেলেও রনিল তা উপভোগ করা যথেষ্ট সময় পাবেন না বলে মনে করা হচ্ছে। মে-তে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ষষ্ঠবারের মতো পদের অধিকারী হন বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতা, যিনি দেশটিতে একজন করিৎকর্মা রাজনৈতিক কৌশলী হিসেবে পরিচিত। খবর বিডিনিউজের।
ওই সময় অনেকে তার নিয়োগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন, কারণ তিনি ক্ষমতাসীন রাজাপাকসে পরিবার থেকে আসেননি। রাজাপাকসে পরিবার তখন সামাজিক বিশৃঙ্খলার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এই পরিবারের ক্ষমতার ভিত্তি পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলেরও কেউ ছিলেন না বিক্রমাসিংহে। কিন্তু তারপরও সাধারণ শ্রীলঙ্কানদের ক্রোধ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না তিনি। সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীরা কলম্বোতে প্রধান সরকারি ভবনগুলো তছনছ করেছে আর তাদের কারণেই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে বিদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এতে বিক্রমাসিংহে অস্থায়ী ভিত্তিতে দায়িত্ব পেয়েছেন, তবে গোটাবায়ার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র দেওয়ার বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি, যা বুধবারই আসবে বলে স্পিকার জানিয়েছিলেন। তারপরও বিক্রমাসিংহে কী করবেন তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি এবং পশ্চিম প্রদেশে কারফিউ জারি যেখানে দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী কলম্বোর অবস্থান। তবে তার এসব আদেশ এখনও আনুষ্ঠানিকাভাবে কার্যকর করা হয়নি। এর আগে বিক্রমাসিংহে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছিলেন আর তা যদি করতেন তাহলে ২০ জুলাই নতুন নেতা নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত পার্লামেন্টের স্পিকারই হতেন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তিনি এখনও সরে দাঁড়াননি, এতে রাস্তায় অবস্থান নেওয়া বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ উস্কে উঠছে। বুধবার পুলিশের বাধা সত্বেও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ঢুকে পড়ে সেটির দখল নিয়ে নেয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইছেন। এক ভিডিও বার্তায় বিক্রমাসিংহে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় ভবন দখলকারী বিক্ষোভকারীদের সেগুলো ছেড়ে যেতে এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তবে তিনি কোথায় আছেন তা জানা যায়নি। শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল শাভেন্দ্র সিলভা সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার আগ পর্যন্ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ ঠিক করার জন্য এবং সন্ধ্যার মধ্যে তা আমাদের ও জনগণকে জানানোর জন্য রাজনৈতিক নেতাদের অনুরোধ করেছি আমরা।
শুক্রবার শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের অধিবেশন বসার কথা রয়েছে। গোটাবায়ার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগপত্র পেলে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২০ জুলাই এমপিরা ভোটাভুটিতে অংশ নিবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ না করলে সঙ্কট থেকেই যাবে বলে শঙ্কা করছেন বিরোধী এমপিরা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কোভিড-১৯ এর নতুন ঢেউ
পরবর্তী নিবন্ধসাবেক ইসি মাহবুব তালুকদার গুরুতর অসুস্থ