আজ বিশ্ব থ্রম্বোসিস দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিবসটি। থ্রম্বোসিস বা রক্ত জমাট বাঁধাজনিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে।
চিকিৎসকরা বলছেন, থ্রম্বোসিস বলতে রক্তনালিতে অস্বাভাবিক রক্ত জমাট বাঁধাকে বোঝায়। যদি কোনো কারণে অস্বাভাবিকভাবে রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধে, তবে রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফলে সেখানকার কোষের মৃত্যু হতে পারে এবং আক্রান্ত অংশের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি বা আংশিক নষ্ট হতে পারে। মস্তিষ্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হতে পারে। হার্টে রক্তনালীতে রক্তজমাট হলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। বিশ্বে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন থ্রম্বোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। হাসপাতাল ভর্তির ৬০ ভাগ রোগী ভর্তি অবস্থায় বা ভর্তির ৯০ দিনের মধ্যে থ্রম্বোসিস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি আমাদের দেশে এই থ্রম্বোসিস জনিত রোগ যেমন হৃদরোগ, ব্রেন স্ট্রোক, ভেনাস থ্রম্বএম্বলিজম ইত্যাদি রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থা অপ্রতুল ও অত্যন্ত ব্যয়বহুল, যা সাধারণ জনগণের নাগালের বাইরে। কিন্তু সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো এই থ্রম্বোসিস অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। সেই লক্ষ্যে ২০১৪ সাল হতে থ্রম্বোসিসের ধারণার সূত্রপাতকারী জার্মান চিকিৎসক ও গবেষক রুডলফ ভার্সোর জন্ম তিথিতে প্রতি বছর বিশ্ববাসীর মধ্যে প্রতিরোধ জনসচেতনতা তৈরীর লক্ষ্যে ১৩ অক্টোবর ‘বিশ্ব থ্রম্বোসিস দিবস’ পালিত হয়।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. গোলাম রাব্বানি দৈনিক আজাদীকে বলেন, বাংলাদেশের মত নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে ব্যয়বহুল উচ্চ মৃত্যু ঝুঁকিপূর্ণ থ্রম্বোসিসের জন্য প্রয়োজন প্রতিরোধ সচেতনতা। থ্রম্বোসিসের ঝুঁকি ও প্রতিরোধের মূলমন্ত্র হলো– আপনি আপনার রক্তপ্রবাহ সচল রাখুন, আপনার জীবন যাত্রা সচল থাকবে।
থ্রম্বোসিসের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে– অস্বাভাবিক ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ডিস লাইপেডিমিয়া, ধুমপান, অতিমাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ, জন্মনিরোধক বড়ি সেবন, ক্যান্সার, দীর্ঘমেয়াদে হাসপাতালে ভর্তি, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা এবং জন্মগত রক্তজমাট ত্রুটি।
উল্লেখ্য, থ্রম্বোসিস দিবস উপলক্ষে চমেক হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের উদ্যোগে আজ সকাল সাড়ে ৬টায় নগরীর নাসিরাবাদ হাউজিং সোসাইটি থেকে ৫ কিমি হাঁটার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে চমেকের শাহ আলম বীর উত্তম মিলনায়তনে বৈজ্ঞানিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।