রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জামায়াত নেতাসহ তিন চাচাতো ভাই-বোনের মৃত্যু

উখিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধ

কক্সবাজার প্রতিনিধি | সোমবার , ৭ এপ্রিল, ২০২৫ at ৬:০৩ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রক্তক্ষয়ী সংষর্ঘে তিন চাচাতো ভাইবোন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো তিনজন। পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম কুতুপালং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন, পশ্চিম কুতুপালং এলাকার বাসিন্দা ও কুতুপালং বাজার জামে মসজিদের খতিব আবদুল্লাহ আল মামুন (৪৫), তাঁর চাচাতো ভাই আবদুল মান্নান (৩৬) ও চাচাতো বোন শাহিনা বেগম (৩৮)। তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহ আল মামুন ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর আমির এবং আবদুল মান্নান ও শাহিনা বেগম সহোদর।

আহতরা হচ্ছেন, মো. হোসনের মেয়ে পিংকি আকতার, নাজির হোসাইনের পুত্র আব্দুল হামিদ ও মো. হোসেন প্রকাশ মাতুর পুত্র আব্দুল করিম। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে কথা কাটাকাটি থেকে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ও নিহতদের আত্মীয় ইঞ্জিনিয়ার হেলাল উদ্দিন জানান, নিহত খতিব মাওলানা আবদুল্লাহ আল মামুন চাচাতো ভাই নিহত আবদুল মান্নান ও তার ভাইবোনদের কাছ থেকে ভিটার একটি অংশ ক্রয় করেন। এর মধ্যে আবদুল মান্নান গং ভিটার আরো একটি অংশ মাওলানা আবদুল্লাহ আল মামুনের ভাইদের কাছে বিক্রির কথা মোখিকভাবে পাকাপাকি করেন। কিন্তু মান্নান গং পক্ষ হঠাৎ করে ওই জমি বাইরের একটি পক্ষের কাছে বিক্রির কথা বললে উভয়পক্ষের (মামুন ও মান্নান) মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর অংশ হিসেবে রোববার সকাল ৭টার দিকে বিরোধপূর্ণ ভিটায় নিহত মাওলানা আবদুল্লাহ আল মামুন ও তার ভাইয়েরা সীমানা দেয়াল নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এতে আবদুল মান্নান পক্ষ বাধা দিলে তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে উভয়পক্ষের নারীপুরুষ সবাই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।

ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দীন আরো জানান, সংঘর্ষের প্রথম দিকে লাঠিসোটা ব্যবহার হলেও এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ দা ও ছুরি ব্যবহার করে। এতে খতিব আবদুল্লাহ আল মামুন, আবদুল মান্নান ও শাহিনা বেগম গুরুতর আহত হন। বেলা ১১টার দিকে তিনজনকে প্রথমে উখিয়ার কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের এমএসএফ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক তখন আবদুল মান্নান ও শাহিনা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। মামুনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকেও মৃত ঘোষণা করেন।

কুতুপালং বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী বলেন, মারামারির সময় বাড়ির বাইরের লোকজন এগিয়ে এলেও উভয়পক্ষকে সংযত করা যায়নি। এমন নৃশংস ঘটনা উখিয়ায় আর ঘটেনি বলে তিনি জানান।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের চারজনকে আটক করা হয়েছে এবং আরো যারা জড়িত তাদের ধরতে অভিযান চলছে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএনজি টেক্সিতে ভাড়া নৈরাজ্য
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথমবার বন্দর থেকে পুরো পৌরকর পাচ্ছে চসিক