রইল বাকি ১৩৫টি!

হালদায় আরো একটি ডলফিনের মৃত্যু

রাউজান প্রতিনিধি | সোমবার , ২১ মার্চ, ২০২২ at ৮:১৮ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে আবারো একটি ডলফিন মরে ভেসে উঠেছে। প্রত্যক্ষদর্শী হালদা রক্ষা আন্দোলনের সদস্য মহিউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, গতকাল রোববার বিকাল ৫টার দিকে মরা ডলফিনটি জোয়ারে ভেসে এসে উজানের দিকে চলে গেছে। তিনি বলেন, ভেসে আসা ডলফিনটি ফুলে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এক থেকে দুদিন আগে এটি মারা গেছে। জানা গেছে, গত চার বছরে এই
নদীতে ৩৫টি ডলফিন মারা গেছে। হালদার মাছ ও ডলফিন নিয়ে যারা গবেষণা করেন তাদের মতে, অধিকাংশ মৃত ডলফিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) হিসাব মতে, লাল তালিকাভুক্ত অতি বিপন্ন প্রজাতি এই ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে অবস্থান করা এই বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন রয়েছে মাত্র ১ হাজার ১শ। এই প্রজাতির ডলফিল হালদাতেই ছিল ১৭০টি। স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিদের মতে, বিশেষজ্ঞদের এই হিসাব সঠিক ধরে নিলে এখন হালদায় অবশিষ্ট রয়েছে ১৩৫টি ডলফিন।
ডলফিনের মৃত্যু নিয়ে নদীপাড়ের মানুষেরা জানান, হাটহাজারী, রাউজান উপজেলা প্রশাসন ও নৌ পুলিশের তৎপরতায় বর্তমানে হালদায় যান্ত্রিক নৌযান চলাচল কমে গেছে। এছাড়া রাউজানের সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশনায় নদীপাড়ের জনপ্রতিনিধিরাও নদীতে নজরদারি রেখেছেন।
অনেকে বলেছেন, হালদার মুখে (কালুরঘাটের উত্তরাংশের কর্ণফুলীর সংযোগ) প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিক বড় বড় যান্ত্রিক নৌযান বালু নিয়ে চলাচল করে। ড্রেজারের মাধ্যমে হালদা চরের আশপাশের এলাকা থেকে বালু উঠিয়ে এসব নৌযানে পরিবহন করা হয় কালুঘাটের দিকে। স্থানীয়দের ধারণা, খনন কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বালু পরিবহনের নিয়োজিত যান্ত্রিক নৌযানের ডুবন্ত পাখার আঘাতে প্রতিনিয়ত ডলফিনের মৃত্যু হচ্ছে।
নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, হালদায় এ পর্যন্ত যত ডলফিন মারা গেছে প্রায় সবক’টির শরীরে আঘাত ছিল। নৌযান ও মাছ চোরদের জালে আটকা পড়ে ডলফিন মারা যাচ্ছে। হালদার মুখে প্রতিদিন বালুবাহী যান্ত্রিক নৌযান চলছে। এসব বন্ধ করা না গেলে ডলফিন ছাড়াও মা মাছও মরতে থাকবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসৈকতে মরা মাছ ও প্রাণী ভেসে আসার কারণ কী
পরবর্তী নিবন্ধচার নাবিকের এখনো সন্ধান মেলেনি