তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যৌতুক দেয়া-নেয়া দুটোই সমান অপরাধ। যৌতুক ও মাদককে ঘৃণা করতে শিখুন। বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়ে বর্তমান সরকার বাল্য বিয়ের লাগাম টেনে ধরতে পেরেছে। অচিরেই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশ যৌতুক ও মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হবে। যৌতুক ও মাদকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ইনসাফভিত্তিক মানবিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সরকারের বড় লক্ষ্য। এজন্য গণসচেতনতা বাড়াতে গণমাধ্যম ও মসজিদের ইমাম-খতিব উলামা পীর মাশায়েখসহ প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
গতকাল শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ কমপ্লেক্সে আঞ্জুমানে রজভীয়া নূরীয়া বাংলাদেশ আয়োজিত যৌতুক ও মাদক বিরোধী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আঞ্জুমানে রজভীয়া নূরীয়ার চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কাশেম নুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার যুগ্ম মহাসচিব এরশাদ মাহমুদ, তরুণ সংগঠক ফারাজ করিম চৌধুরী, চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যাপক নূ ক ম আকবর হোসেন, রাজনীতিক ড. মাসুম চৌধুরী, আল্লামা মাসউদ হোসাইন আলকাদেরী, অ্যাড. আব্দুর রশিদ দৌলতি প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের এই জনপদে ইসলাম কায়েম হয়েছে কোনো যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে নয়, অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে ইসলাম কায়েম হয়েছে এখানে। আজকে অনেকে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তরুণদেরকে বিপথগামী করে। সেগুলোর বিরুদ্ধে আলেম সমাজের সোচ্চার ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই দেশ সবার। সব মত এবং দলের মানুষের। সবাই মিলে যুদ্ধ করে আমাদের এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা সবাই মিলে এই দেশটাকে গড়তে চাই। প্রতিবছর যৌতুক বিরোধী সমাবেশ আয়োজনের জন্য আঞ্জুমানে রজভীয়া নূরীয়ার চেয়ারম্যান আবুল কাশেম নুরীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এরকম সামাজিক আন্দোলন যদি আলেম সমাজের পক্ষ থেকে করা হয় তাহলে এটির বড় একটা প্রভাব সমাজের ওপর পড়ে। কারণ আলেম সমাজ হচ্ছে সমাজের স্বাভাবিক নেতা। তিনি বলেন, যৌতুক বিরোধী আইন আছে, কিন্তু আইন অনেকে মানে না। শুধু আইন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে যে সবকিছু হয় না সেটির প্রমাণ হচ্ছে যৌতুক। এটি বন্ধের জন্য জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, তরুণ সমাজ নানা কারণে মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে এগুচ্ছে। শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপের মাধ্যমে মাদক নির্মূল করা সম্ভবপর নয়। এজন্য পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে। একই সাথে সামাজিক প্রতিরোধ ও আন্দোলন যদি থাকে তাহলে সবকিছুর সমন্বয়ে মাদকরোধ করা সম্ভব হবে।
হাছান মাহমুদ বলেন, মাদকাসক্তির পাশাপাশি আমাদের কিশোর তরুণদের মাঝে ফেসবুক আসক্তি দেখা দিয়েছে। কিশোরদের হাতে হাতে মোবাইল ফোন, কিন্ত মা-বাবা খবর রাখে না সন্তানরা মোবাইলে কি করছে। এজন্য আমি মনেকরি যৌতুক ও মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত আসক্তির বিরুদ্ধেও কথা বলা প্রয়োজন।