যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ না করলে যোগ্য শিক্ষার্থী বের হবে না

চবিতে ড. একলাসুদ্দিন আহমদ মেধা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে উপাচার্য

চবি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ at ৫:২৭ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘একলাসুদ্দিন আহমদ স্মারক মেধা পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। বিজ্ঞান অনুষদের ৬টি বিভাগের অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ৬ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যারিন সাইন্স অনুষদ অডিটরিয়ামে স্মারক মেধা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান (একাডেমি) ও অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন (প্রশাসন)

অনুষ্ঠানে যে ৬ জন কৃতী শিক্ষার্থীদেরকে মেধা পুরস্কার প্রদান করা হয় তারা হলেন পদার্থবিদ্যা বিভাগের মো. নাঈম হোসাইন, রসায়ন বিভাগের মো. ফারহান লাবীব, গণিত বিভাগের হালিমা তাসনিম চৌধুরী, পরিসংখ্যান বিভাগের ফারহান রশিদ, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল এবং ইন্সটিটিউট অব ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সাইন্সের ফাহরিয়াল ইমরোজ।

কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মো. নাইম হোসাইন বলেন, আমাদের শিক্ষকরা আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়। আমি আমার সৃষ্টিকর্তা, পিতামাতা, বড় ভাই ও আমার সহপাঠীদের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি সবার কাছে দোয়া প্রত্যাশী আমি যেন সামনের দিনগুলোতেও নিজের সাফল্য ধরে রাখতে পারি।

. একলাসুদ্দিন আহমদের ছেলে প্রকৌশলী ইনাম আহমেদ বলেন, আমি আমার পিতার মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন শিক্ষক ও গবেষক চাই। যার কারণে আমি প্রতি বছর এমনটা আয়োজন করি শিক্ষার্থীদেরকে উৎসাহ দিতে যেন তারা নিজেদের মেধাকে বিজ্ঞান গবেষণায় কাজে লাগাতে পারে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্‌ইয়া আখতার বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম দেশ গড়িয়ে বিদেশে যাদের হাত ধরে গেছে তাদের একজন হলেন ড. একলাসুদ্দিন আহমদ। আমি আমার শিক্ষকতা জীবনের শুরুতে দেশের কোথাও বা বিদেশ গেলে কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি বলতাম আমি ড. একলাসুদ্দিন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, জামাল নজরুল ইসলামের মত ব্যক্তিদের সহকর্মী। এখন কোথায়ও গেলে বলতে পারি না আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমুক শিক্ষক বা গবেষকের সহকর্মী। কারণ এখন আর বিখ্যাত গবেষক, শিক্ষক নাই। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর ইউজিসির তোয়াক্কা না করে যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছি। আমরা জামাল নজরুল ইসলামের মতো, মূর্তজার মতো, একলাসুদ্দিনের মতো শিক্ষক পেতে চাই। আজকে কৃতিত্ব শিক্ষার্থীদের দেখে হিংসা হচ্ছে মন চাচ্ছে আমিও আবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে এই মেধা বৃত্তিটা নিয়ে যাই। আমরা শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার একটা পরিবেশ তৈরী করেছি। এখন শিক্ষার্থীদের ঠিক করা উচিত তারা কি এখন সেই শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখবে।

তিনি বলেন, যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ না করলে যোগ্য শিক্ষার্থী বের হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় হলো দক্ষ গবেষক তৈরি করার কেন্দ্র, কোনো রাজনৈতিক লিডার তৈরি করার কারখানা নয়। আমাদের শিক্ষার্থীদের বলব, তোমরা একলাসুদ্দিনের মতো এমন গুণী, গবেষক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের অনুসরণ করলে জীবনে অনেক কিছু করতে পারব।

অনুষ্ঠানে উপাচার্যের বক্তব্য শেষে ড. একলাসুদ্দিনের রুহের মাগফিরাত কামনা করে কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়া মাহফিল করা হয়।

উল্লেখ্য, অধ্যাপক ড. এখলাসউদ্দীন আহমদ ১৯৩৮ সালের ১ অক্টোবর ঢাকার টঙ্গী থানার দত্তপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবেদ আলী ও মাতার নাম সুফিয়া বেগম। ১৯৬০ ও ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৮৪ সালে ২০ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার স্মৃতি রক্ষার্থে তার নামে মেধা পুরস্কার চালু হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজলজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অবদান রাখার প্রত্যাশা
পরবর্তী নিবন্ধরাশিয়ার ব্যবসায়িক মিত্রদের ওপর নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করে ৬২% মার্কিনি : জরিপ