যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে তা এখনো পূর্ণ হয়নি

নারী অধিকার ফোরামের সমাবেশে আবু সুফিয়ান

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ

যে লক্ষ্য ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে তা এখনো পূর্ণ হয়নি বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, শুধুমাত্র একটি পরিবর্তন হয়েছে, ফ্যাসিস্ট সরকার তার দলবল নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা, জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করা। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কারণ জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে হলে জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের যে সংস্কার প্রয়োজন তা জনগণকে সাথে নিয়ে নির্বাচিত সরকার বাস্তবায়িত করবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হলে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে এবং দেশে গণতন্ত্র ও সুশাসন ফিরে আসবে।

তিনি গতকাল বিকেলে নগরের বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে জাতীয়তাবাদী নারী অধিকার ফোরাম চান্দগাঁও থানা শাখার উদ্যোগে আয়োজিত ‘নারী সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

সুফিযান বলেন, স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও জনদুর্ভোগ এখনো কমেনি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজার পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। আয়ের সাথে ব্যয়ের সমন্বয় নেই। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিন দিন চরম অবনতি ঘটছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও তাদের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত থেমে নেই। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে আওয়ামী লীগের লোকগুলো আছে। তাদের দোসররাও আছে।

আবু সুফিয়ান বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার পতনে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনসংগ্রামে পুরুষের পাশাপাশি এদেশের নারী সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। জুলাই অভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম ছাত্রীদেরকে স্লোগান দিতে। পুলিশ যখন সাধারণ ছাত্রদের গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছিল ছাত্রীরা তখন পুলিশের গাড়ির সামনে গিয়ে ব্যারিকেড হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তীব্র আন্দোলনে আন্দোলনরত ছাত্রজনতার জন্য রাজপথে পানি ও খাবার নিয়ে এগিয়ে এসে তাদের সাহস জুগিয়েছে এদেশের মাবোনেরা। সন্তান ও ভাইকে নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে রাজপথে নেমেছিল মাবোনেরা। রক্তক্ষয়ী এই লড়াইয়ে পুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে অভুতপূর্ব অংশগ্রহণের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট, খুনি সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে এদেশের নারী সমাজ। পৃথিবীর বুকে যত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং যত বিপ্লব হয়েছে প্রতিটি পরিবর্তন ও বিপ্লবে নারীর ভূমিকা অসামান্য। তাই আওয়ামী শাসক গোষ্ঠির দুর্নীতি ও দুঃশাসনে বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মেরামতে দেশনায়ক তারেক রহমান ৩১ দফার যে রুপরেখা দিয়েছেন তা বাস্তবায়নেও নারী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু। বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর বিএনপির সাবেক মৎস বিষয়ক সম্পাদক মো. বকতেয়ার, চান্দগাঁও থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ভুইয়া, জসিম উদ্দিন। নারী সংগঠক শিরিন জাহান শিরিনের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোলজার হোসেন, এম. আবু বক্কর রাজু, মো. আলমগীর, মো. আলম, নুরনবী, সাইদুল ইসলাম, মো. হোসেন মাসুম, পারভীন আক্তার, ফরিদা বেগম, মোছাম্মৎ মুক্তা, সাবরিনা আক্তার, রশিদা খানম, দিলসাত বেগম, রুবিনা আক্তার, জাহেদা বেগম, রোকেয়া হক, শহীদুল ইসলাম, জালাল উদ্দিন, রহিম উদ্দিন, সোলায়মান, নাঈম, সাফায়েত হোসেন সোহান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাঠ্যবইয়ে আবু সাঈদের মৃত্যুর তারিখ ভুল
পরবর্তী নিবন্ধরাশেদ রউফ – এর অন্ত্যমিল