যেভাবে ডলার ও রিয়াল নিয়ে পালিয়েছিলেন তিনি

৩ মাস পর গ্রেপ্তার, অর্থের একাংশ উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ১৩ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৫৭ পূর্বাহ্ণ

প্রতারণার মাধ্যমে ডলার ও রিয়াল আত্মসাৎকারীকে তিন মাস পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো। একই সাথে আত্মসাৎকৃত অর্থের একাংশ উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত প্রতারকের নাম সাবের হোসেন প্রকাশ নুরুল হুদা প্রকাশ সেলিম (৩৬)।
জানা যায়, নিজেকে প্রাইম ব্যাংকের অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারক সাবের নগরীর লালদীঘির পূর্ব পাড় সিলভার মানি এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের কর্ণধার রিমন বড়ুয়ার সাথে সখ্যতা গড়ে তোলেন। প্রায় সময় তিনি রিমনের প্রতিষ্ঠানে এসে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা বিনিময় করতেন। ২৭ জুন দুপুরে সাবের হোসেন অগ্রণী ব্যাংক লালদীঘি শাখায় এসে রিমন বড়ুয়াকে ফোন দিয়ে ১৫০০০ মার্কিন ডলার ও ২০০০ সৌদি রিয়াল, যার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক তের লাখ ছেচল্লিশ হাজার টাকা, এঙচেঞ্জ করার কথা বলেন। রিমন সাবেরকে জানান, তিনি বাইরে আছেন। তার ছোট ভাই তাপস বড়ুয়া অফিসে আছে। তার কাছে গিয়ে মানি এঙচেঞ্জ করে আসার জন্য বলেন। সাবের রিমনকে অনুরোধ করেন তার ছোট ভাই তাপসকে ডলার ও রিয়াল নিয়ে অগ্রণী ব্যাংকে আসার জন্য। সাবের হোসেন ব্যাংক থেকে নগদে ক্যাশ করে টাকা তাপস বড়ুয়াকে দিয়ে দেবেন। রিমন সরল বিশ্বাসে ১৫০০০ মার্কিন ডলার ও ২০০০ সৌদি রিয়াল নিয়ে তাপস বড়ুয়াকে সাবেরের কাছে যেতে বলেন। বেলা সাড়ে বারোটার দিকে তাপস উক্ত কারেন্সি নিয়ে সাবেরের কাছে দিয়ে টাকা চান। সাবের হোসেন টাকা ক্যাশ করার কথা বলে অগ্রণী ব্যাংকের ভল্টের দিকে গিয়ে ব্যাংকের পেছনের সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালিয়ে যান। পরে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে রিপন বড়ুয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি পরবর্তীতে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মাসুদ পারভেজকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকালে তিনি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। তার মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি টিম ৫ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন বসুরহাট পৌরসভার রূপালী চত্বর এলাকা থেকে সাবের হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তাকে আদালতে তুলে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সাবের প্রতারণার মাধ্যমে মার্কিন ডলার ও সৌদি রিয়াল নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, আত্মসাৎকৃত ডলার ও রিয়াল ঘটনার পরপরই তিনি রিয়াজুদ্দিন বাজার, আগ্রাবাদ ও ঢাকার পল্টনের মানি এঙচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করে কিছু টাকা তার নিজের অ্যাকাউন্টে রাখেন। বাকি টাকা তার পরিচিত কয়েকজনের কাছে জমা রাখেন। তার তথ্য মতে, ৭ অক্টোবর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ফেনী শাখায় তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। সাবেরের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আগেও মামলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচিটাগাং ইস্পাতের মালিক ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পরবর্তী নিবন্ধবিনিয়োগকারীদের কর সুবিধা দিল সরকার