যে কোনো কিছুর বিনিময়ে রাউজানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভাইস–চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। রাউজানের সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, রাউজানে আসা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যেও আতংক থাকে। তারা বলে, ‘কোথায় আসলাম’। এই আতংক কেটে যেতে হবে। এখানে শান্তি–শৃঙ্খলার উন্নতি হতেই হবে। যারা সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, যারা সমাজে বিভাজন সৃষ্টি করতে চাচ্ছে, তাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
তিনি গতকাল শনিবার রাউজান কলেজ মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হুদা। গিয়াস কাদের বলেন, এ দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর জন্য বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। পত্রিকায় এসেছে অনেক মাজার ভাঙা হয়েছে। এগুলো কারা ভেঙেছে? আমি–আপনি? অসম্ভব। হিন্দুস্তানের দালালরা এসব মাজার ভেঙেছে। কোনো মুসলমান এই আকাম–কুকাম করবে না। হিন্দুস্তানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মানুষই এগুলো করছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
এসময় ধর্মীয় মূল্যবোধ দ্বারা শাসনতন্ত্র বা সংবিধান সংশোধন, গণতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে স্থান দিয়ে সংবিধান সংস্কারের দাবি জানিয়ে গিয়াস কাদের বলেন, যদি ধর্মীয় মূল্যবোধ দিয়ে একটি শাসনতন্ত্র হয়, একটি সংবিধান হয় এতে কোনো অপরাধ হবে? এদেশে কোনো ব্যক্তি ধর্মীয় মূল্যবোধকে উপেক্ষা, অবজ্ঞা করতে পারে বলে আমার মনে হয় না।
রাষ্ট্রীয় কাঠামোর মধ্যে থেকে এই মূল্যবোধ রাষ্ট্র রক্ষা করবে। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদ একটা স্তম্ভ হতে হবে। আর আমরা বিশ্বাস করি নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এসময় ধর্মীয় মূল্যবোধ বলতে ইসলামী মূল্যবোধ, হিন্দুদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টানদের মূল্যবোধ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্র এই মূল্যবোধগুলো রক্ষা করবে। ধর্মীয় মূল্যবোধ দিয়ে সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আশা করি সকলে একমত পোষণ করবেন।
গত ১৭ বছর দেশবাসীকে নির্যাতন–নিপীড়নের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করতে হয়েছে মন্তব্য করে গিয়াস কাদের বলেন, জুলাই–আগস্টের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন জীবন পেয়েছি। আজ এভাবে কথা বলতে পারব সেটা কল্পনারও অতীত ছিল। জুলাই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছে, যারা রক্ত দিয়েছে তাদের শ্রদ্ধাভরে আজ স্মরণ করছি। তাদের ত্যাগের কারণে আজ আমরা সমবেত হতে পেরেছি। তাই তাদের সবসময় স্মরণ রাখতে হবে।
পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনজুরুল হক এবং জেলা যুবদলের সহ–সভাপতি সাবের সুলতানের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আবু জাফর, বিএনপি নেতা সোলেমান মনজু, রাউজান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহম্মদ মেম্বার, পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ মঞ্জুরুল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ মাস্টার, রাউজান উপজেলা জামায়াতের আমির শাহাজান মনজু, জামায়াত নেতা মো. বেলাল উদ্দিন, রাউজান পৌর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনিসুজ্জামান সোহেল, রাউজান উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ–সভাপতি টিপু চেয়ারম্যান, যুগ্ম সম্পাদক মুসলেহ উদ্দিন, মহিউদ্দিন জীবন, যুবদল নেতা মোজাম্মেল হক, হাজী জসিম উদ্দিন, মাসুদ আলম, জানে আলম, ইউছুপ তালুকদার, শাহজাহান শাকিল, শাহাজান মিরাজ, ছাত্রদল নেতা লিটন মাহাজন ও রেওয়াজ আরিফ।