নগরীতে এক যুবককে বাসায় ডেকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগে এক কিশোরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার শিকার যুবক ও গ্রেপ্তারকৃত তরুণ একই মাদরাসার সাবেক ছাত্র। গত শনিবার রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানার স্টেশন রোডের ইলেকট্রিক গলি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের একজন রাশেদুল ইসলাম (১৯)। দ্বিতীয়জন কিশোর হওয়ায় তার পরিচয় জানায়নি পুলিশ। দুজনই রিয়াজউদ্দিন বাজারে রাশেদুলের বড় ভাইয়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘মা বাবার দোয়া শুঁটকি স্টোরে’ চাকরি করেন বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন। অভিযোগকারী সায়েম খানের (২২) বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নে।
ওসি মহসীন জানান, সায়েম শনিবার থানায় এসে অভিযোগ করেন তার পূর্ব পরিচিত রাশেদুল তাকে বাসায় নিয়ে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে এবং চুল কেটে দেয়। এগুলো ছড়িয়ে দেয়ার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা আদায় করে। অভিযোগ পাওয়ার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি মহসীন আরও জানান, চট্টগ্রামের কুলগাঁও এলাকার আহসানুল উলুম জামিয়া গাউসিয়া কামিল মাদরাসা থেকে ২০১৫ সালে দাখিল পরীক্ষা দেয়ার সময় সায়েম ও রাশেদুলের মধ্যে পরিচয় হয়। রাশেদুলের দাবি, সায়েম তাকে বারবার সমকামিতার প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল ম্যাসেজ ও ভিডিও পাঠাতো। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাশেদুল তাকে শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। শুক্রবার রাশেদুল সায়েমকে তার বাসায় ডেকে নেয়। বাসায় যাওয়ার পর রাশেদুল ও দ্বিতীয় কিশোর মিলে সায়েমকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা আদায় করে। তাকে ছেড়ে দেওয়ার সময় পকেট থেকে আরও ১৬০০ টাকা নিয়ে নেয়।
ওসি মহসীন বলেন, রাশেদুল ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ দেখিয়ে সায়েমকে শায়েস্তা করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাতে সে নিজেই অপরাধে জড়িয়ে গেছে। সায়েমের বিষয়ে রাশেদুল আগেই পুলিশকে অভিযোগ করতে পারত। কিন্তু তা না করে নিজে সায়েমকে শায়েস্তা করতে গিয়ে অপরাধ করেছে। পাশাপাশি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে টাকা আদায় করেও সে অপরাধ করেছে।