যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় ইসরায়েলি ড্রোন ও বিমান হামলায় নিহত ২০

| রবিবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২৫ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় গতকাল শনিবার ইসরায়েলি ড্রোন ও বিমান হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ও আরও ৮০ জনের বেশি আহত হয়েছেন, জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। এতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গাজায় চলমান ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি আবারো পরীক্ষার মুখে পড়ল। প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন, গাজা সিটির ঘনবসতিপূর্ণ রিমাল মহল্লা এলাকায় একটি গাড়িতে প্রথম হামলাটি চালানো হয়। এই ড্রোন হামলায় গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়। আগুন নেভাতে ও হতাহতদের উদ্ধার করতে বহু মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। খবর বিডিনিউজের। রয়টার্স জানিয়েছে, এই ড্রোন হামলায় যে পাঁচজন নিহত হয়েছেন তাদের সবাই ওই গাড়িটির আরোহী না পথচারীরাও রয়েছেন, তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান বাহিনী গাজার মধ্যাঞ্চলীয় দিয়ের আলবালাহ ও নুসেইরাত শিবিরের দুটি বাড়িতে পৃথক বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ১০ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন বলে গাজার চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন। পরে গাজা সিটির পশ্চিমাংশে আরেকটি বাড়িতে ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে আরও অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন বলে স্থানীয় চিকিৎসা কর্মীরা জানিয়েছেন। এতে শনিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মোট নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা অন্তত ২০ জনে দাঁড়ায়।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজায় একজন ফিলিস্তিনি বন্দুকধারী ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকার ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং ওই এলাকার যে সড়ক ধরে মানবিক সহায়তা গাজার দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করছে সেটির অপব্যবহার করে। এতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছে তারা। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যস্থলে তারা আঘাত হেনেছে বলে দাবি ইসরায়েলি বাহিনীর।

গাজায় হামাসের এক কর্মকর্তা ইসরায়েলের এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে এসব অজুহাত খাড়া করছে ইসরায়েল। তিনি জানান, হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধ থামাতে পারলেও সহিংসতা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। এসব সহিংসতার জন্য ইসরায়েল ও হামাস নিয়মিতভাবে একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পরপরই লাখ লাখ ফিলিস্তিনি গাজায় তাদের ধ্বংস হয়ে যাওয়ার বাড়িঘরে ফিরতে শুরু করে। ইসরায়েল শহরাঞ্চলের অবস্থানগুলো থেকে তাদের সেনাদের সরিয়ে নেয় আর অবরুদ্ধ ছিটমহলটিতে ত্রাণ সরবরাহও বাড়তে শুরু করে।

ইসরায়েলি সেনারা গাজা ছেড়ে না গেলেও যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হামাস নিজেদের আবার পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। এতে সেখানে কার্যত ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অঞ্চলটির প্রায় বিভাজিত অবস্থা নিয়ে অনেকেই উদ্বিগ্ন।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে দেড় মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক হামলায় ৩১৬ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় তাদের তিনজন সেনা নিহত হয়েছেন আর তারা হামাস ও তাদের মিত্র সশস্ত্র ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের ওপর আঘাত হানছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির লেখকরা ভৌগোলিক সীমানার বাইরেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিস্তার ঘটাচ্ছেন
পরবর্তী নিবন্ধফটিকছড়িতে ব্যবসায়ীকে গুলি করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১