ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজার সঙ্গে ইসরায়েলের এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলা লড়াই শেষ করতে আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও আশু যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট কোনো ইঙ্গিত নেই। ইসরায়েল গাজায় বোমা হামলা চালিয়েই যাচ্ছে। অপরদিক থেকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা পাল্টা রকেট হামলা চালাচ্ছে।
ইসরায়েলি নেতারা জানাচ্ছেন, তারা হামাস ও ইসলামিক জিহাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে তাদের চাপে রাখছেন। কিন্তু এখনও গাজার এই গোষ্ঠীগুলোর হাতে ছোড়ার মতো পর্যাপ্ত রকেট রয়ে গেছে বলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র স্বীকার করেছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। তাদের হিসাবে গাজার অস্ত্রাগারে এখনও ১২ হাজারেরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও মর্টারের গোলা আছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলের ওই কর্মকর্তা। খবর বিডিনিউজের।
মঙ্গলবার গাজা সীমান্তের কাছে একটি ইসরায়েলি খামারে রকেটের আঘাতে থাইল্যান্ড থেকে আসা দুই কর্মী নিহত ও আরও সাত জন আহত হন বলে পুলিশ জানিয়েছে। ইসলামিক জিহাদ ও গাজা ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণকারী হামাস হামলার দায় স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ইসরায়েলের আশদোদ, আশকেলোন ও বীরশেবা শহরে রকেট হামলা হয়।
ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের জঙ্গি বিমানগুলো হামাসের বেশ কয়েকজন যোদ্ধার বাড়ি ও কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত স্থাপনা ও অস্ত্র গুদামে হামলা চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ভূখণ্ডের দক্ষিণাঞ্চলের লক্ষ্যস্থলগুলোতে গোলাবর্ষণ করেছে।
গাজার চিকিৎসা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ১০ মে ইসরায়েলি হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে ৬৩টি শিশুসহ ২১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং এক হাজার চারশরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। অপরদিকে ইসরায়েলে এ পর্যন্ত দুটি শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়েছেন বলে দেশটির কর্তৃপক্ষগুলো জানিয়েছে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা জানিয়েছে, চলতি লড়াই শুরু হওয়ার পর থেকে গাজা ভূখণ্ডে প্রায় ৪৫০টি ভবন পুরোপুরি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ছয়টি হাসপাতাল ও নয়টি প্রাথমিক পরিচর্যা স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। এতে বাস্তুহারা ৫২ হাজার লোকের মধ্যে প্রায় ৪৮ হাজার জাতিসংঘ পরিচালিত ৫৮টি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী ইসরায়েল লক্ষ্য করে ৩৪৫০টির মতো রকেট ছুড়েছে। তাদের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা সিস্টেম ৯০ শতাংশ রকেট ধ্বংস করেছে এবং কিছু রকেট লক্ষভ্রষ্ট হয়েছে। অপরদিকে তাদের বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে অন্তত ১৬০ জন ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে বলে দাবি ইসরায়েলের।