যুক্ত হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জও

অন্তর্ভুক্ত হবে চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর ভূমি ১০ হাজার কোটি টাকায় নির্মিত হবে দুটি সেতু

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২২ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৪১ পূর্বাহ্ণ

দেশের বৃহত্তম অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরসরাই ইকোনমিক জোনের সাথে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জকেও যুক্ত করা হচ্ছে। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি সেতু নির্মাণের মাধ্যমে কোম্পানীগঞ্জের চরাঞ্চলের কয়েক হাজার একর ভূমি অন্তর্ভুক্ত করা হবে ইকোনমিক জোনে। জোনের পশ্চিম পাশের নদীতে দুটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুরুতে ত্রিশ হাজার একর ভূমি নিয়ে কার্যক্রম শুরু হলেও এই জোনের ব্যাপ্তি অনেক বৃদ্ধি পাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মীরসরাই, সীতাকুণ্ড ও ফেনীর উপকূলীয় এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজার একর ভূমিতে বহুমুখী কার্যক্রম চলছে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর নামের এই ইকোনমিক জোন উন্নয়নের কাজ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। বেজার কাছ থেকে বিভিন্ন শিল্প গ্রুপ শত শত একর ভূমি বরাদ্দ নিয়েছে। দেশি-বিদেশি শীর্ষস্থানীয় অনেক প্রতিষ্ঠান মীরসরাই ইকোনমিক জোনে জায়গা নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে আগ্রহী। এক সময়কার অবহেলিত চরাঞ্চলে এখন বিভিন্নমুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে। বিভিন্ন ধরনের ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে কয়েক হাজার শ্রমিকের পাশাপাশি প্রকৌশলীরা কাজ করছেন।
বেজার শীর্ষ একজন কর্মকর্তা জানান, ত্রিশ হাজার একর জায়গা নিয়ে মীরসরাই ইকোনমিক জোনের কার্যক্রম শুরু হলেও দিনে দিনে জায়গার চাহিদা বাড়ছে। বিষয়টি মাথায় রেখে ফেনীর সোনাগাজীর চরাঞ্চলকে ইতোমধ্যে এই ইকোনমিক জোনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শুরু হয়েছে ভূমি উন্নয়নের কার্যক্রম। সোনাগাজীর চরাঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জসহ বিস্তৃত এলাকার হাজার হাজার একর চরাঞ্চলও কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে। বিস্তৃত ওই এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অনুন্নত একটি অঞ্চল হিসেবে ওই এলাকার হাজার হাজার একর চরের ভূমি উৎপাদনের বাইরে রয়েছে। গরু-মহিষের চারণভূমির ওই চরাঞ্চলে ফসলও হয় না।
বেজা নিজস্ব সমীক্ষায় দেখেছে, কোম্পানীগঞ্জের চরাঞ্চলের ওই ভূমি মীরসরাই ইকোনমিক জোনে অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে দেশের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। তবে এর জন্য মীরসরাই ইকোনমিক জোনের পাশে নদীতে দুটি সেতু নির্মাণ করতে হবে। মীরসরাই ইকোনমিক জোনের পাশের নদীতে প্রথম সেতুটি গিয়ে একটি আইল্যান্ডের মতো ছোট্ট জায়গায় পড়বে। ওখানে কিছুটা গ্যাপ দিয়ে দ্বিতীয় সেতুটি কোম্পানীগঞ্জ চরে গিয়ে পড়বে। দুটি মিলে প্রায় দেড় কিলোমিটার সেতু নির্মাণ করতে হবে। একই সাথে অ্যাপ্রোচ রোডসহ আনুষাঙ্গিক ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর ইতোমধ্যে এই দুটি সেতু নির্মাণের ব্যাপারে কার্যক্রম শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী গতকাল আজাদীকে বলেন, মীরসরাই ইকোনমিক জোনের সাথে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জকে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। এ জন্য দুটি ব্রিজ নির্মাণ করবে এলজিইডি। প্রায় দশ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ দুটি নির্মাণ করা হবে। আগামী মার্চের মধ্যে ব্রিজ নির্মাণের ব্যাপারে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
তিনি বলেন, চরাঞ্চলের হাজার হাজার একর ভূমি উন্নয়নের মূল স্রোতের বাইরে রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ ভূমিকে উন্নয়নের মূলধারায় যুক্ত করতে পারলে দেশের অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাত্র পাঁচ মিনিট বাঁচল তিন প্রাণ
পরবর্তী নিবন্ধআবাসস্থল হারিয়ে বিপদে বন্যহাতি