যুক্তরাষ্ট্রে নারীর কারাদণ্ড

ছেলেবন্ধুর হাতে সন্তান খুন

| রবিবার , ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ at ১০:৪৬ পূর্বাহ্ণ

ছেলেবন্ধুর হাতে খুন হয়েছে সন্তান। মা হয়ে ছেলের সুরক্ষা নিশ্চিতে ব্যর্থ এক নারীকে দোষীসাব্যস্ত করে ১৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। ওই নারীর নাম রেবেকা হগ, বয়স ২৯ বছর। ওকলাহোমার একটি আদালত গত বছর নভেম্বরে হগকে দোষীসাব্যস্ত করে। বিবিসি জানায়, আদালতে জুরি বোর্ডের একজন সদস্য ওই নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার সুপারিশ করেছিলেন। খবর বিডিনিউজের। কিন্তু বিচারক তা নাকচ করে দিয়ে ১৬ মাসের কারাদণ্ড দেন। গত তিন মাস ধরে কারাগারে বন্দি থাকায় আগামী ১৩ মাস পর সাজার মেয়াদ শেষ হবে হগের। রায় ঘোষণা পর হগ বলেন, অতীতে ফেরতে গিয়ে তার ছেলের খুন হওয়া আটকাতে তিনি যেকোনো কিছু করতে রাজি আছেন। বলেন, তার মত সুন্দর, শক্তিশালী, দক্ষ এবং স্বাস্থ্যবান সন্তান পেয়ে আমি খুবই গর্বিত ছিলাম। গত দুই বছরে একটি জিনিসেই আমি শান্তি খুঁজে পেয়েছি, সেটা হলো ওই ব্যক্তির মৃত্যু, যে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি জানি আমার সন্তান এখন স্বর্গে আছে এবং সে (ওই নারীর সাবেক ছেলেবন্ধু) তার আশেপাশে কোথাও নেই। হগের সাজা ঘোষণার সময় বিচারক মাইকেল টপার বলেন, কারাগারে মৃত্যু তার প্রাপ্য নয়। আপনি দানব নন। আপনার মূল্যবোধ আছে, আপনার মূল্য আছে। হগের সাজা পাওয়ার ঘটনা গণমাধ্যম এবং নারী অধিকার সুরক্ষা গ্রুপগুলোর মধ্যে হইচই ফেলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা অঙ্গরাজ্যের আইনানুযায়ী যদি বাবা-মা সন্তানদের নির্যাতিত হওয়া থেকে সুরক্ষা করতে না পারে তবে শিশু নিপীড়নকারীর মত বাবা-মাও আইনের চোখে একই অপরাধে অপরাধী বলে বিবেচিত হন। বিবিসি জানায়, ২০২০ সালের প্রথম দিন হগের দুই বছরের ছেলে রিডারকে বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। হগ নিজেই ঘুম থেকে উঠে ছেলের মৃতদেহ আবিষ্কার করেন। তার আগের দিন একটি বারে টানা ১২ ঘণ্টা ডিউটি শেষে ভোরে বাড়ি ফিরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন হগ। ছেলের মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার পর হগ দেখতে পান তার ছেলেবন্ধু ক্রিস্টোফার ট্রেন্টও বাড়ি থেকে উধাও। রিডারের মৃত্যুর চারদিন পর পুলিশ একটি পাহাড়ের পাদদেশে ট্রেন্টের মৃতদেহ খুঁজে পায়। ধারণা করা হয়, ট্রেন্ট পাহাড় থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পাহাড়ে একটা গাছে খোদাই করে লেখা ছিল রেবেকা নির্দোষ। রিডারের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলা হয়। পরে বিচারে প্রমাণিত হয়, ট্রেন্টই রিডারকে খুন করেছেন। হগ বলেন, রিডারের মৃত্যুর আগে তিনি বুঝতেই পারেননি ট্রেন্ট তাকে নির্যাতন করতো। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, রিডারের শরীরে ছোটখাটো আঘাতের চিহ্ন তিনি আগেই দেখতে পেয়েছিলেন। যেগুলোর কোনো ব্যাখ্যা ছিল না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজব্দ আফগান তহবিলের অর্ধেক ছাড়ের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের
পরবর্তী নিবন্ধঘূর্ণিঝড় বাতসিরাই মাদাগাস্কারে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০