মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে চীন। পাশাপাশি পেলোসির তাইওয়ান সফরের জেরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের সামরিক সংলাপ, জলবায়ু আলোচনাসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বন্ধ করছে দেশটি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল পৃথকভাবে এসব ঘোষণা দেয়। পেলোসির তাইওয়ান সফরে ক্ষুব্ধ চীন এবার যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। সুনির্দিষ্ট ৮টি পদক্ষেপের মধ্যে সীমান্ত পারাপারের অপরাধ, মাদক পাচার ঠেকানো এবং অবৈধ অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রেও ওয়াশিংটনের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও বাতিল করেছে চীন। সমুদ্রে সামরিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ওই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
পেলোসির ওপর নিষেধাজ্ঞা : এক বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, চীনের গুরুতর উদ্বেগ এবং কড়া আপত্তির পরও পেলোসি তাইওয়ান সফর করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি চীনের অভ্যন্তরীন বিষয়ে মারাত্মকভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন, চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন করেছেন, এক চীন নীতিকে পায়ে দলেছেন এবং তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলেছেন। পেলোসির এই বেপরোয়া উস্কানির জবাবে চীন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পিপলস রিপাবলিক অব চায়নার সংশ্লিষ্ট আইনানুযায়ীই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা কী ধরনের হবে সে ব্যাপারে বিবৃতিতে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি।
পেলোসির তাইওয়ান সফরের সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সম্পর্কে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আগেই সতর্ক করেছিলেন। কয়েকবছরে ধরেই তাইওয়ান, বিশ্ব অর্থনীতি এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রসনের মতো বিষয় নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। গত মাসে এক ফোনকলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাইওয়ান প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আগুন নিয়ে না খেলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তারপরও গত মঙ্গলবার তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে সফর করেন ন্যান্সি পেলোসি। তার এই সফরের কড়া প্রতিক্রিয়ায় তাইওয়ান ঘিরে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে চীন।