যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নবম নিরাপত্তা সংলাপ এ বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে, তবে এর দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিরাপত্তা সংলাপ প্রতি বছর নিয়মিতভাবে হলেও এবার বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে ঢাকায় এই সংলাপে বসবেন দুই দেশের কর্মকর্তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়ন ও বিকাশের লক্ষ্যে প্রতি বছর সেক্টরভিত্তিক বিভিন্ন সংলাপ আয়োজিত হয়ে থাকে। খবর বিডিনিউজের।
এই নিয়মিত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উভয় দেশের রাজধানীতে পর্যায়ক্রমে প্রতি বছর নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ২০২২ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে অষ্টম যুক্তরাষ্ট্র–বাংলাদেশ নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হওয়ায় এর ধারাবাহিকতায় সংলাপের নবম আসর এ বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলে আমরা আশা করছি। কবে নাগাদ এই সংলাপ হবে, তার দিনক্ষণ মুখপাত্র না জানালেও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে তা হতে পারে।
ঢাকা–ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক বৈঠকগুলো নিয়মিত নাকি বিশেষ পর্যায়ের– এমন প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, সাম্প্রতিক বৈঠক, সংলাপ কিংবা উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিদ্যমান বহুমাত্রিক সম্পর্কের নিয়মিত প্রক্রিয়ারই একটি অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একক রপ্তানি বাজার এবং বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী দেশ। এছাড়া রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রেও তারা সর্বাগ্রে অবস্থান করছে। ফলশ্রুতিতে একটি গতিশীল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসেবে ঢাকা–ওয়াশিংটনের মধ্যে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন আলোচনা হয়ে থাকে।
ব্রহ্মপুত্র নদীতে চীনের আটটি হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ নির্মাণের খবরের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মুখপাত্র সেহেলী বলেন, সরকারের কাছে এই বিষয়ক পর্যাপ্ত তথ্য নেই। তাকে প্রশ্ন করা হয়, ব্রহ্মপুত্র নদে চীন ৮টি হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ দিচ্ছে। বলা হচ্ছে, এতে পানির সুষম বণ্টন হবে না। পর্যাপ্ত পানি না পেলে বাংলাদেশ বিপর্যস্ত হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ চীনের কাছে জানতে চেয়েছে কি? জানতে চাইলে চীনের উত্তর কী? উত্তরে মুখপাত্র বলেন, আমরা এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি, যা পরবর্তীতে জানানো হবে। পানি বণ্টন নিয়ে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি হওয়ার কোনো আলোচনা শুরু হয়েছে কি না– জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এই বিষয়ে কোনো আলোচনা শুরু হয়নি।
আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে কিংবা জানুয়ারির প্রথম ভাগে বাংলাদেশে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক এখনও অনুরোধ জানায়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি পর্যবেক্ষক অনুরোধ জানায়নি। তবে গত ৯–২৩ জুলাই ২০২৩ তারিখে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি নির্বাচনী প্রাক–মুল্যায়ন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর করেছে। এবং আগামী অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এরূপ একটি প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর করার কথা রয়েছে।
২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। সেই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা। সেহেলী সাবরীন বলেন, আসন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যবেক্ষককে অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন ও নির্বাচন কমিশন কর্তৃক জারিকৃত নির্বাচন পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।