যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাস করাই ছিল আমার ভুল : আশরাফ গানি

| শুক্রবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সহযোগী দেশগুলোকে বিশ্বাস করাই ছিল তার একমাত্র ভুল। ১৫ই অগাস্ট তার প্রাসাদের নিরাপত্তা বাহিনী যখন তাকে জানায় যে তারা প্রেসিডেন্ট বা কাবুলকে আর সুরক্ষা দিতে অপারগ, তার কয়েক মিনিটের মধ্যে আকস্মিকভাবেই তিনি দেশ ছেড়ে পালানোর সিদ্ধান্ত নেন। বিবিসির রেডিও ফোর চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি. গানি বলেন, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তালেবানের দ্রুত ক্ষমতা দখলের জন্য কেন আফগান জনগণ তাকে দোষারোপ করেছিল।
মি. গানি স্বীকার করেন যে তিনি ভুল করেছিলেন। তিনি বলেন তার ভুলের মধ্যে ছিল এটা ধরে নেয়া যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আরও ধৈর্য্য নিয়ে অপেক্ষা করবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতাকালে আমেরিকার সাথে তালেবানের চুক্তির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ওই চুক্তির অধীনে যা ঘটেছে তারই ফলশ্রুতি ছিল ১৫ই অগাস্টের ঘটনা। একটা শান্তি চুক্তির বদলে আমরা পেয়েছিলাম প্রত্যাহার প্রক্রিয়া নিয়ে চুক্তি।
তিনি আরও বলেন, দুভার্গ্যজনকভাবে আমার ওপর কালো রঙ লেপে দেয়া হয়েছিল। তাদের (তালেবানের) সাথে বসার কোন সুযোগ আমাদের দেয়া হয়নি। তাদের সাথে বৈঠক করেছেন রাষ্ট্রদূত খালিলযাদ। বিষয়টা আমেরিকার কুক্ষিগত হয়ে গিয়েছিল। এটা আর আফগান কোন ইস্যু ছিল না। যেভাবে ওই চুক্তি করা হয় তাতে আমাদের মুছে দেয়া হয়েছিল। ওই চুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয় যে, আমেরিকা ও তার মিত্র বাহিনী আফগানিস্তান থেকে সৈন্য কমাবে এবং বন্দি বিনিময় করবে। সেই শর্তে তালেবান আফগান সরকারের সাথে আলেচনায় বসতে সম্মত হয়। সে আলোচনা কার্যকর হয়নি।
আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২১এর গ্রীষ্মকালে প্রতিশ্রুতি দেন যে আমেরিকান সৈন্যদের শেষ দল আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে ১১ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এর সাথে সাথেই তালেবান একের পর এক শহর দখলের অভিযান শুরু করে দেয়।
মি. গানি বলেন, শেষ পর্যন্ত যেটা হয় সেটা একটা সহিংস অভ্যুত্থান, কোন রাজনৈতিক চুক্তি সেটা ছিল না, সেটা জনগণকে সাথে নিয়ে কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়াও ছিল না।
আশরাফ গানি যেদিন কাবুল ছেড়ে যান, সেদিনই তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। যার পর থেকে কাবুল মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত হয়েছে, বিশেষ করে তালেবান ক্ষমতা নেয়ার পর আন্তর্জাতিক সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে।
মি. গানি বিবিসিকে দেয়া এই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কাবুল পতনের পেছনে যেসব কারণ আছে তার কিছু কিছুর জন্য দায় নিতে তিনি রাজি। যেমন, আন্তর্জাতিক সহযোগী দেশগুলোকে বিশ্বাস করা।
তিনি বলেন, আমার সারা জীবনের কাজ ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার মূল্যবোধ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এবং আমাকে বলির পাঁঠা করা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিচারবহির্ভূত হত্যা কোথায় পেলেন
পরবর্তী নিবন্ধএবার ঢুকে পড়েছে ১৩টি বন্য হাতি