যা সহজলভ্য তার মূল্যায়ন হয় কম

হৈমন্তী তালুকদার | সোমবার , ২২ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৮:২৭ পূর্বাহ্ণ

জীবনে সবকিছু সহজে পেয়ে গেলে কোনো কিছুর তেমন মূল্যায়ন হয় না। যা কষ্ট করে মানুষ পায় তখন গুরুত্ব দেয় বেশি। এটা যুগে যুগে প্রমাণিত সত্য। কেউ কেউ নীরবে অনেক কষ্ট করে বলেই অনেকেই ভালো থাকে। ভালো থাকার গল্পে অনেকের ভূমিকা থাকে কিন্তু অনেকেই তা বুঝে না, বুঝলেও স্বীকার করে না। মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব আর কৃতজ্ঞতাবোধ এই দুটো বিষয় যখন অনুপস্থিত থাকে, সেখানে কিছু আশা করাটা বেমানান।

কিন্তু যাদের বাবামা, সন্তানদের মানবিক হতে শেখায়, সামাজিকতার মধ্যে সকলকে আপন করে ভালোবাসা আর সম্মান দিয়ে বড় করে তারা শতো অবহেলা, নীরব অপমানেও নিজেদের মধ্যে সহনশীল মনোভাব, পরোপকারী চিন্তা নিয়ে জীবনে লড়াই করে সকলে ভালো থাকার জন্য। আপনি যদি মানুষের উপকার, আন্তরিকতা, সম্মান সহযোগিতা মনোভাবের বদলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, হিংসাত্মক আচরণ, মূর্খতার কারণে মানুষকে আঘাত দিতে থাকেন। সেটা কোনো না কোনোভাবে আপনার জীবনে পুনরায় ফিরে আসবেই। ধর্মীয় দৃষ্টিতে বলা হয় ক্ষমাশীল হতে, কিন্তু বারবার একইরকম কষ্টগুলো পেয়ে আপনি কতোবার মহান হতে পারবেন, সেই মানসিক শক্তি হয়তো একটা সময় আর থাকে না।

তবুও যারা ভালোবাসা ও সম্মান দিতে অভ্যস্ত তারা মুখ ফিরিয়ে চলতে পারে না। আমরা অনেক সময় পারিবারিকভাবে কিছু পরামর্শ ও উপদেশ নিয়ে বড় হই, শিক্ষাগত যোগ্যতা বড় নয় মানুষ হিসেবে আপনি কেমন সেটাই বড় বিষয়।

আমরা ডাবল ফেইস মানুষকে চিনি না, কিন্তু কিছু কিছু মানুষ একান্ত আপনার সাথে হিংসা মনোভাব নিয়ে অবহেলা, অপমান করার নিম্ন মানসিকতা নিয়ে চলতে পছন্দ করে। এটাতো নিজস্ব আচরণ কাউকে বদলানো যায় না। সেখানে নিজের আচরণের মধ্যে ভালোবাসা, মানবিকতার, এবং উপকার পেয়েও অকৃতজ্ঞ আচরণে অভ্যস্ততা গড়ে তোলে, সেই মানুষদের আপনি শতো মৈত্রী মনোভাব পোষণ করলে বারবার মূর্খতার আচরণ করে যায়। এককথায় সবকিছু সহজে পেয়ে গেলে কোনকিছুর মূল্যায়ন করে না। আপনার সারল্য মনোভাব, অল্পতেই কৃতজ্ঞতাবোধের আচরণ মূর্খতা নিয়ে চলা মানুষদের মনে বিন্দুমাত্র স্পর্শ করে না।

হয়তো একদিন এই পৃথিবী থেকে সবাই আগে বা পরে বিদায় নিয়ে নিবে, কিন্তু যশ, খ্যাতি, ধন, সম্পত্তি কিছু সাথে যাবে না, যাবে শুধু তাদের কর্ম। সেই অকৃতজ্ঞ, হিংসাত্মক মনোভাবের মানুষদের জন্য একরাশ সমবেদনা ও করুণা রেখে চলুন। কথায় বলে কিছু বিচার নাকি প্রকৃতিই করে, আজ হোক কাল আপনি যা দিবেন তা ফিরে আসবেই। সেটা অবহেলা হোক আর ভালোবাসা হোক। সকলে তবুও সুখী হোক,সুখে বাস করুক। আপনি কষ্ট পেলেও অপেক্ষা করুন সময় আপনার ও আসবে। কিন্তু আপনি আপনার পারিবারিক শিক্ষা ও মর্যাদায় বাঁচুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবদলে যাচ্ছে পড়ার পরিবেশ
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের শুঁটকি-সম্ভাবনাময় রপ্তানিখাত