ভোটের আগ মুহূর্তে হরতাল–অবরোধের মধ্যে যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে, তা মোকাবিলার উপায় বাতলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। তার কথায়, এখন নির্বাচনের সময় এসেছে, এখন আবার আরেকটি সমস্যা আমাদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। সেটি কী? সেটি হচ্ছে বিএনপি–জামায়াতের সন্ত্রাস, জ্বালাও–পোড়াও; নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণ। এই সমস্যাও কিন্তু সমাধান করা যায়। আমরা জানি, গত তিন নির্বাচন ধরে প্রত্যেক নির্বাচনের ঠিক মাস দুয়েক আগে এই জ্বালাও–পোড়াও, সংঘর্ষ শুরু করে। এটার মোকাবিলা কী? এটার মোকাবিলা কিন্তু খুবই সহজ। এটার মোকাবিলা হচ্ছে যারা জ্বালাও–পোড়াও করছে তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেবেন। যারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদেরকে ভোট দেবেন, নৌকায় ভোট দেবেন।
গতকাল দুপুরে ঢাকার সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের সপ্তম আসরে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের ৭৫০টিরও বেশি সংগঠনের মধ্য থেকে ১২টি সংগঠনের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
তরুণদের উদ্দেশে জয় বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, দেশের যত সমস্যা আছে, দেশের বড় বড় সমস্যা নিয়েও অনেকে চিন্তা করে, দুর্নীতি বলেন, এটার সমস্যাও আপনারাই সমাধান করতে পারেন। শুধুমাত্র সরকার পারে, এটা না। আমরা সবাই কিন্তু বাংলাদেশের সকল সমস্যার মোকাবিলা করতে পারি।
আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সিআরআইয়ের চেয়ারপারসন জয় বলেন, যারা দেশের জন্য কিছু করে নাই, সেই স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের সৃষ্টি দল, যে দেশে গণহত্যা করেছে সেই জিয়াউর রহমান, যে নিরীহ মানুষকে ফাঁসি দিয়েছে তার সৃষ্ট দল, যারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, যারা যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনেছে, বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর সন্ত্রাস নির্যাতন চালিয়েছে এবং এখনও চালিয়ে যাচ্ছে, তারা তো দেশের জন্য কোনো সময় কিছু করেনি। একমাত্র দেশের জন্য আপনারা করছেন এবং আওয়ামী লীগ করে যাচ্ছে। এখন এটা আর কাউকে বোঝাতে হয় না, কারণ ১৫ বছরে বাংলার মানুষ দেখেছে বাংলাদেশ কোথা থেকে কোথায় এসেছে; কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।
উন্নয়নের এ ‘গতি’ গত ১৫ বছর আগে কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুর এ দৌহিত্র বলেন, এই গতি যদি ধরে রাখা যায়, আগামী ১০–১৫ বছরে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হবে। আর আগামী ১০–১৫ বছরে বাংলাদেশে বিএনপি–জামায়াত বলে কোনো দল আর টিকবে না। তখন এই বাংলাদেশে শান্তি আসবে, যখন এই জঙ্গিবাদ, মৌলবাদী শক্তির চিহ্ন বাংলাদেশ থেকে মুছে যাবে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার সন্দেহ নাই।
বিদেশিদের সমালোচনা করে জয় বলেন, আমরা জানি যে এখন অনেকেই এই জঙ্গিবাদ, মৌলবাদীদের উস্কাচ্ছে, যেহেতু নির্বাচন সামনে। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, এদের কথায় কান দেবেন না। কে কী বলছে এতে যায় আসে না। আর বিশেষ করে দেখা যায় বিদেশি অনেকে, অনেক বিদেশি রাষ্ট্রদূত ঠিক নির্বাচনের আগ মুহূর্তে অনেক বেশি কথা বলা শুরু করে। ঠিক তখনই কিন্তু এই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, এই জ্বালাও–পোড়াও শুরু হয়। তার মানে কি, তাদেরকে এরাই উস্কাচ্ছে। তবে চিন্তা করবেন না, যেদিন নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে, পরদিন তারাও চুপ হয়ে যাবে, আর বেশি দিন নাই, মাত্র দেড় মাস।
বিজয়ী ও শীর্ষ বাছাই হওয়া সব সংগঠনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শুরু করেছিলাম, তখন ছিল মাত্র কয়েকশ। এখন সাতশর বেশি আবেদন এসেছে। আপনারা যেভাবে কাজ করছেন সব জেলায়, যেভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছেন, পরিশ্রম করছেন, যে স্বীকৃতি পাচ্ছেন, জাতিসংঘ, ইউনেস্কো সবখানে, তা দেখে খুব গর্ব হয়। বাংলাদেশের তরুণরা দেশকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে!
বাংলাদেশের অনেক সমস্যা আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমার গর্ব হয়, আপনারা শুধু সমস্যা নিয়ে চিন্তা করেন না। আপনারা সমাধানও চিন্তা করছেন। সমাধান বের করছেন, বাস্তবায়নও করছেন। আমি শুরু থেকে বাংলার তরুণদের বলছি, আমরা দেশ হিসেবে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি।
‘বাংলাদেশের তরুণরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিজের কর্মসংস্থান আপনারা বের করে নিতে পারেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় যত সমস্যা আছে, দুর্নীতি বলেন বা অন্য কিছু, এই সমস্যার সমাধানও আপনারা করতে পারেন। শুধু সরকার পারে তা না, আমরা সবাই সব সমস্যা মোকাবিলা করতে পারি।
তরুণরাই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে জানিয়ে জয় বলেন, আমাদের যে পাথফাইন্ডার আছে, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। স্বাধীনতার আগে থেকে আপনারা দেখিয়েছেন, বাংলাদেশের চেতনা, স্বাধীনতার চেতনা। এই তরুণরা আপনাদেরই সন্তান। আপনাদের প্রতি আমার ব্যক্তিগত কৃতজ্ঞতা।