নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় পোশাককর্মীকে ধর্ষণ এবং পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এক দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব–৭।গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মালুরা গ্রামের মৃত ইসলাম ভুইয়ার ছেলে আবদুর শুক্কুর (৫০) ও তার স্ত্রী কয়ৈতা বেগম ওরফে শেফালী (৪৫)। গত বুধবার তাদের গ্রেপ্তার করা হলেও গতকাল দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব। তারা দীর্ঘ ১৩ বছর পলাতক ছিলেন।
র্যাব–৭ জানায়, পাঁচলাইশ এলাকার এক পোশাককর্মীর (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বখাটে সিদ্দিক ওরফে ডিবি সিদ্দিক। গত ২০১০ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে পোশাক কারখানার ছুটির পর ভিকটিমকে বাসায় ফেরার পথে আব্দুর শুক্কুর ও কয়ৈতা বেগম ওরফে শেফালীর সহযোগিতায় সিদ্দিক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যায়। পরে ভিকটিমকে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি এবং বিয়ে করার কথা বলে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন আটকে রেখে তাকে ধর্ষণ করে। ভিকটিমের সন্ধান না পেয়ে তার পরিবার বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে থাকে। খোঁজাখুজির একপর্যায়ে ভিকটিমের কর্মস্থলের বান্ধবী ও আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে সিদ্দিকের বাসায় গিয়ে ভিকটিমকে খোঁজ পাওয়া যায়। তখন ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে আবদুর শুক্কুর ও শেফালী ভিকটিমকে উদ্ধারে বাধা দেয়। পরে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের সহায়তায় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করলে ধর্ষক ও সহযোগীরা এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন
দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পুলিশ প্রতিবেদন এবং সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
র্যাব–৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. শরীফ উল আলম জানান, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক দুই আসামি দীর্ঘ ১৩ বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে ছিলেন। গোপন খবরের ভিত্তিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে শেফালীকে এবং তার দেওয়া তথ্যে ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে তার স্বামী আব্দুর শুক্কুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
