বাংলা, বাঙালি, বাংলাদেশের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাকার। একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। বঙ্গবন্ধু তাঁর সমস্ত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামকে পরিণত করেছিলেন নিজের কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে। অসীম সাহস, মনোবল, ত্যাগ ও নেতৃত্বগুণে তিনি জাতিকে এক করতে পেরেছিলেন। তিনি যেমন চেয়েছিলেন তাঁর বাঙালি জাতি যেন বিশ্বের মানচিত্রে সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে, তেমনি চেয়েছিলেন গরিব–দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে। নিজের সুখ–স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিয়ে তিনি তাঁর লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করেছিলেন। ফলে বাঙালি পেয়েছে তার কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। এতে পূরণ হয় বঙ্গবন্ধুর সারা–জীবনের স্বপ্ন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন বুননের কারিগর। তাঁকে বলা হয় বাঙালি জাতির ধ্রুবতারা। বাঙালির সুখ–দুঃখ, আনন্দ–বেদনা ও স্বপ্ন–আকাঙ্ক্ষাকে নিজের ভেতরে ধারণ করে তিনি বাঙালিকে উপহার দিয়েছেন স্বাধীনতা। বিশ্বের বুকে এঁকে দিয়েছেন নতুন মানচিত্র। তিনি শুধু একটি স্বাধীন দেশ বা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেননি। জাতি গঠনেও রেখে গেছেন অনন্য অবদান।
কিন্তু তাঁকে বাঁচতে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেন, ‘ইতিহাসের অন্যতম রাজনৈতিক এবং জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে। বাংলার মানুষ আজও বঙ্গবন্ধুর শোকে মুহ্যমান, নিজের বিবেকের কাছে সকলেই দেনার দায়ে জর্জরিত।’ ‘ধন্য সেই পুরুষ’ কবিতায় কবি শামসুর রাহমান লিখেছিলেন, ‘ধন্য সেই পুরুষ যাঁর নামের ওপর পতাকার মতো দুলতে থাকে স্বাধীনতা।’ এ কথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই যে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে আমরা অকৃতজ্ঞ জাতি হিসেবে নিজেদের পরিচিত করেছি সারাবিশ্বে। শুধু তাই নয়; ইতিহাস থেকে তাঁর নাম–নিশানা মুছে ফেলার ব্যর্থ চেষ্টাও হয়েছে ২১ বছর। এ বড় দুঃখজনক।
লেখক : সহযোগী সম্পাদক, দৈনিক আজাদী












