দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলের অভিযোগে যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপক (শিপিং) মো. এমদাদুল হক ও তার স্ত্রী পারভীন হকের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে দুদক। গতকাল দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম– ১ এ মামলা দুটি দায়ের করেন দুদক বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার। মামলার এজাহারে বলা হয়, দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ৫১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯১ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন মো. এমদাদুল হক। পাশাপাশি তিনি একজন সরকারি চাকুরীজীবী হয়েও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭৩ লাখ ১১ হাজার ৯২৮ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখল করেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। দুদক জানায়, মো. এমদাদুল হক ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে স্থাবর ৮৬ লাখ ৪৬ হাজার ৫৭০ টাকা ও অস্থাবর ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ২০ টাকাসহ মোট ১ কোটি ২৪ লাখ ৭৬ হাজার ৫৯০ টাকার সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে তার নামে স্থাবর সম্পদ ১ কোটি ৭৮ লাখ ১৩ হাজার ৮৫২ টাকা ও অস্থাবর সম্পদ ৯৮ লাখ ৫৭ হাজার ৩২৯ টাকাসহ মোট ২ কোটি ৭৬ লাখ ৭১ হাজার ১৮১ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে তিনি ১ কোটি ৫১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯১ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে গোপন করেন।
দুদক সূত্র জানায়, মো. এমদাদুল হক ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের একটি দলিল মূলে একটি ফ্ল্যাট ৫৭ লাখ ৮১ হাজার ৫৩০ টাকা ক্রয় মূল্য ঘোষণা দিলেও যাচাইকালে দেখা যায় উক্ত ফ্ল্যাটের মূল্য ৬০ লাখ ৬ হাজার টাকা। এছাড়া তার অর্জিত অর্থ দিয়ে তার স্ত্রী পারভীন হকের বড় ভাই মো. সুজা
আকবরের নামে ২০১০ সালে ৯১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ১ টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। যা তিনি সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ না করে গোপন করেন। তাছাড়া আয়কর নথি অনুযায়ী ২০১৯–২০২০ করবর্ষে ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৩০৯ টাকা হাতে নগদ উল্লেখ করলেও দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তা তিনি উল্লেখ না করে গোপন করেছেন।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, যমুনা অয়েলের সাবেক কর্মকর্তা (বরখাস্তকৃত) মো. এমদাদুল হকের স্ত্রী পারভীন হক দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকার স্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন। একই সাথে তিনি জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭৫ লাখ ৯৭ হাজার ৯৮২ টাকা অর্জন করে ভোগ দখল করেন। স্বামীর মতো তিনিও তার বড় ভাই মো. সুজা আকবরের নামে ৬৪ লাখ টাকা দিয়ে একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। যা তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ না করে গোপন করেন। মামলার বাদী দুদক বিভাগীয় কার্যালয় চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার আজাদীকে বলেন, মামলা তদন্তকালে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তা আমলে নেয়া হবে।
দুদক সূত্র জানায়, মো. এমদাদুল হক রাউজানের সুলতানপুর এলাকার রাজা মিয়ার ছেলে। নগরীর মেহেদীবাগের ইকুইটি ভবনের নিজস্ব ফ্ল্যাটে স্ত্রীসহ বসবাস করছেন।