পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ন ম্যাচে দলের চরম বিপর্যয়ে ৪৮ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেললেন জাকের আলি অনিক। স্ট্রাইক রেট ১১৪.৫৮। এমনিতে মোটেও টি–টোয়েন্টি ঘরানার ইনিংস নয়। তবে উইকেট আর পরিস্থিতির দাবি বলেও তো কথা আছে ক্রিকেটে। জাকের আলির এমন ব্যাটিংই তাই হয়ে উঠেছে মহামূল্যবান। দলের জয়ের পর ম্যাচের সেরাও তিনিই। তার কাছেও তাই এই ইনিংসের দারুণ সমাদর। দল না জিতলে কোনো ইনিংসের মূল্যই নেই তার কাছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বাস্তবতায় জাকের আলিকে এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুটা নবীনের পর্যায়েই রাখতে হবে। তবে এই সময়েই তিন সংস্করণে দারুণ কিছু ইনিংস তিনি উপহার দিয়েছেন। কখনও বিপর্যয়ে হাল ধরেছেন। কখনও পাল্টা আক্রমণ করেছেন। নানা পরিস্থিতির দাবি মিটিয়েছেন। সবকটিতে অবশ্য জিততে পারেনি বাংলাদেশ। হেরে যাওয়া সেই ম্যাচগুলিতে নিজের পারফরম্যান্সও হারিয়ে গেছে তার কাছ থেকে। আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে জাকেরের যাত্রা শুরু ২০২৩ সালের এশিয়ান গেমসে। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ওই সময়ে এশিয়ান গেমসে কোনো দেশই তাদের মূল দল পাঠায়নি। তাই মূল দলের হয়ে সত্যিকারের অভিষেকের জন্য গত বছরের মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় জাকেরের। সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে সুযোগ পান ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণ করা ব্যাটসম্যান। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও সামর্থ্যের জানান তিনি দেন প্রথম ম্যাচেই। ছয় নম্বরে নেমে ৪ চার ও ৬ ছক্কায় খেলেন মাত্র ৩৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। কিন্তু ২০৭ রানের লক্ষ্যে ৩ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবারের ম্যাচের আগে শেষ দিকে ফিনিশিংয়ের দায়িত্বে থাকা জাকের আরও চার ম্যাচে খেলেন ত্রিশছোঁয়া ইনিংস। যার দুটিতে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথমটি সংযুক্ত আরব আমিরাতে। পরেরটি পাকিস্তানের বিপক্ষে। দুটি ম্যাচই গত মে মাসে। কার্যকর ইনিংস খেলেও পরাজিত দলে থেকে যাওয়ার যন্ত্রণা থেকে মঙ্গলবার মুক্তি পেলেন জাকের। ৮ রানে জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করার পর সংবাদ সম্মেলনে বেশ জোর গলায়ই বললেন ম্যাচ না জিতলে নিজের পারফরম্যান্স মনে রাখেন না তিনি। ম্যাচ জেতানো ইনিংস খুব জরুরি। আমি শুধু ম্যাচ জেতানো ইনিংসগুলোই কাউন্ট করি। এছাড়া আর কোনো কিছু কাউন্ট করি না। যদি ভালো খেলি আর দল না জেতে তাহলে আমি কাউন্ট করি না। আজকে দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেছি বলেই আজকের ইনিংসটি কাউন্ট হবে। শুরুর দিকে বেশিরভাগ ম্যাচে ৬–৭ নম্বরে খেলেছেন জাকের। গত কয়েক ম্যাচে ৫ নম্বরে নামার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি।
তবে তাতে দৃশ্যপট বদলাচ্ছে খুব অল্পই। কারণ এখনও শেষ দিকে লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়েই খেলতে হয় তাকে। টেস্ট ও ওয়ানডে সংস্করণেও বেশ কিছু ম্যাচে লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করেছেন জাকের। তাতে অবশ্য আপত্তি নেই তার, অভ্যাসটা গড়ে উঠেছে যে বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই। শেষের দিকের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে আমি বয়সভিত্তিক পর্যায় থেকেই ব্যাটিং করি। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ৭ নম্বরে খেলতাম। অনূর্ধ্ব–১৭তে আমার একটা একশ আছে। লেজের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়ে একশটা করেছিলাম। এগুলো আমার অভ্যাস আছে। এগুলো নিয়ে একদম চিন্তা করি না।