পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে কেবলই ছিল লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের রাজত্ব। প্রথম দিনেই আভাস দিয়ে রেখেছিল রানের পাহাড়ে চড়তে যাচ্ছে তারা। তবে দ্বিতীয় দিনে কিছুটা হলেও লঙ্কানদের রানের লাগাম টানার চেষ্টা করেছে বাংলাদেশের বোলাররা। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনটা বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও দিন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৪৬৯ রান। শেষ সেশনের খেলায় বাধা দিয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে একবার খেলা বন্ধ রাখতে হয়েছে। পরে দ্বিতীয় দফায় শুরু হলেও আকাশ মেঘে ঢেকে থাকায় আলোক স্বল্পতায় আগেভাগেই থামাতে হয়েছে দ্বিতীয় দিনের খেলা। প্রায় ২৪ ওভারের মতো বাকি ছিল দিনের। দ্বিতীয় দিনের খেলা যখন সমাপ্তি ঘোষণা করা হচ্ছিল তখন ডিকভেলা ৬৪ আর মেন্ডিস ২২ রানে অপরাজিত। তবে বলতে গেলে দ্বিতীয় দিনটা স্বস্তির মধ্যে কেটেছে বাংলাদেশের। প্রথম দুই সেশনে লঙ্কানদের ৫ উইকেট তুলে নিতে পেরেছে টাইগাররা। সবমিলিয়ে গতকাল শুক্রবার ১৭৮ রান যোগ করেছে স্বাগতিক দল। বৃহস্পতিবার সারাদিন বোলিং করে মাত্র ১ উইকেট নিতে পেরেছিল বাংলাদেশ দল। বিপরীতে ৯০ ওভারে শ্রীলংকা তুলে ফেলেছিল ২৯১ রান। তবে আজ ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ঘুরে দাঁড়ায় টাইগাররা। তাসকিন আহমেদ একাই নিয়েছেন ৩টি উইকেট। এছাড়া দুই স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলামের শিকার ১টি করে উইকেট। ১৪৬ ওভারে ৬ উইকেটে ৪২৫ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় শ্রীলংকা । বিরতির পর তৃতীয় সেশনে খেলা হয়েছে ১০ ওভারের মতো।
আগের দিনের মতো গতকালও লম্বা সময় ধরে খেলার পণ নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওশাদা ফার্নান্দো এবং লাহিরু থিরিমান্নে। তবে তাদের সহজে রান তোলার সুযোগ দেননি বাংলাদেশ দলের পেসাররা। যদিও দিনের ১৫তম ওভারে গিয়ে মিলেছে প্রথম সাফল্য। তাসকিন, শরিফুল, আবু জায়েদ রাহিদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে প্রথম ১৪ ওভারে ২২ রানের বেশি করতে পারেনি শ্রীলংকা। দিনের ১৫তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন তাসকিন। প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নেকে। আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন থিরিমান্নে। ১৫টি চারের সাহায্যে ২৯৮ বলে ১৪০ রানের ইনিংস খেলেন থিরিমান্নে। তাসকিনের করা ১০৯তম ওভারের প্রথম বলে ফিরেন ম্যাথিউজ।
তাসকিনের জোড়া উইকেটের পর এবার ধনাঞ্জয়াকে ফেরান তাইজুল। মাত্র ২ রান করেন ধনাঞ্জয়া। দিনের প্রথম সেশনে ২৬ ওভারে ৪৩ রানের বিপরীতে ৩ উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলংকা। যেখানে তাসকিনের শিকার ছিল ২ উইকেট। ইনিংসের ১৩৬ ও সেশনের ২০তম ওভারে তাসকিনকে নতুন স্পেলের জন্য ডাকেন মুমিনুল। এই স্পেলে এসে সরাসরি বোল্ড করেন ৮৪ বলে ৩০ রান করা নিসাঙ্কাকে। ফলে ভেঙে যায় ৫৪ রানের পঞ্চম উইকেট জুটি। ঠিক পরের ওভারেই উইকেট শিকারের তালিকায় নাম লেখান মেহেদি হাসান মিরাজ। তার অফস্ট্যাম্পের ওপর করা বলে স্কুপ খেলার চেষ্টা করেন সেঞ্চুরির কাছে চলে যাওয়া ওশাদা ফার্নান্দো। কিন্তু ব্যাটে দুইবার লেগে বল হাওয়ায় ভেসে যায়। উইকেটের পেছনে চতুরতার সঙ্গে বলটি লুফে নেন লিটন। আউট হওয়ার আগে ৮১ রান করেন ওশাদা। তবে এরপর আবার প্রতিরোধ গড়েছেন নিরোশান ডিকভেলা ও রমেশ মেন্ডিস। এই জুটিটা ভাঙাই তৃতীয় দিনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বাংলাদেশের বোলারদের জন্য।