গতকাল গ্রুপের ম্যাচে বেলজিয়ামকে হারিয়ে চমকে দিয়েছে মরক্কো। ২-০ গোলে জিতেছে তারা। এই হারের ফলে গত বারের সেমিফাইনালিস্ট এবং এ বারের কালো ঘোড়া বেলজিয়াম বিপদে পড়ল। তবে এ ম্যাচে বিতর্কে জড়াল মরক্কো। ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গোলকিপারকে বদলে দেয় তারা। সঠিক কোনও কারণ জানানো হয়নি দলের তরফে।
খেলা শুরুর আগে দু’দলের ফুটবলাররা সারিবদ্ধ ভাবে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। মরক্কোর গোলকিপার বোনোও সেখানে ছিলেন। তিনিও সতীর্থদের সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গান এবং বিপক্ষ ফুটবলারদের সঙ্গে হাত মেলান। এর পরেই কিছু একটা সমস্যা হয় তার। হঠাৎ তাকে
রিজার্ভ বেঞ্চের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায়। দলের সাপোর্ট স্টাফদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। তখনই দেখা যায় দলের দ্বিতীয় গোলকিপার মুনিরকে তৈরি হতে। জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার পর দলের ছবি তোলার সময় বোনোকে আশেপাশে দেখা যায়নি। তার জায়গায় ছিলেন মুনির। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, কেন শেষ মুহূর্তে গোলকিপার বদলাতে হল মরক্কোকে।
মরক্কোর তরফে কিছু বলা না হলেও জানা গিয়েছে, ম্যাচ শুরুর ঠিক আগেই বোনোর কিছু একটা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। তার চোখে ব্যথা করতে থাকে। তখনই তিনি কোচকে বলেন তার বদলি গোলকিপার নামাতে। যে কারণে শেষ মিনিটে নামেন মুনির। তার থেকেও আশ্চর্যের ব্যাপার, ইংল্যান্ডের ‘বিবিসি’-র ধারাভাষ্যকাররা বুঝতেই পারেননি যে বোনোকে বদলে দেওয়া হয়েছে। ৩৮ মিনিট পর্যন্ত মুনিরকেই বোনো বলে সম্বোধন করতে থাকেন। তার পরে ভুল ভাঙে।
বিশ্বকাপ কি শেষ নেইমারের? কী বললেন ব্রাজিল কোচ
সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন নেইমার। গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচে খেলতে পারবেন না তিনি। তবে কি এ বারের বিশ্বকাপে আর খেলতে পারবেন না নেইমার? গত দু’দিন ধরে এই প্রশ্নই ঘুরছে ব্রাজিল সমর্থকদের মনে। অবশেষে নেইমারের চোট নিয়ে মুখ খুললেন দলের কোচ তিতে। তবে খুব বেশি আশার কথা শোনাতে পারলেন না তিনি। তিনি জানিয়েছেন, তিনি আশাবাদী যে নেইমার আবার দলে ফিরবেন। ব্রাজিলের আর এক ফুটবলার দানিলোও চোট পেয়েছেন। তিনিও চোট সারিয়ে ফিরবেন বলে আশা করছেন তিতে। তিনি বলেছেন, ‘আমি চিকিৎসক নই। বিশেষজ্ঞও নই। তবে আমি বিশ্বাস করি চোট সারিয়ে নেইমার ও দানিলো দলে ফিরবে। আবার ব্রাজিলের হয়ে খেলবে ওরা।’
ব্রাজিলের রিজার্ভ বেঞ্চ যথেষ্ট শক্তিশালী। নেইমার খেলতে না পারলে পরিবর্ত ফুটবলার রয়েছে তিতের হাতে। তবে নেইমারের বিকল্প নেই বলেই জানিয়েছেন ব্রাজিল কোচ। বলেছেন, ‘নেইমারের মতো ফুটবলাররা মাঠে অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে পারে। নেমার আমাদের জন্য কী করেছে তা সবাই জানে। ওর বিকল্প পাওয়া কঠিন।’
চোট সারাতে নেমার ২৪ ঘণ্টা ফিজিয়োর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ব্রাজিলে তার সতীর্থ মারকুইনোস। তিনি বলেছেন, ‘এটা থেকেই প্রমাণিত ও দলে ফিরতে কতটা মরিয়া। আমরা জানি না নেইমার কবে ফিরতে পারবে। তবে আমরা চাইব দ্রুত সুস্থ হয়ে ও মাঠে নামুক।’
সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নামার আগে গতকাল ব্রাজিলের অনুশীলনে কোচ জোর করে নেইমার ও দানিলোকে পাঠিয়েছেন। নেইমার মাঠে থাকলে সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। সেটা জানেন তিতে। তাই এই কাজ করেছেন তিনি।
শেষ ষোলোর অঙ্ক নিজেরাই কঠিন করল জাপান
আগের ম্যাচে জার্মানিকে হারালেও গতকাল কোস্টারিকার কাছে হারতে হল জাপানকে। এই হারের ফলে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার অঙ্ক নিজেরাই কঠিন করে ফেলল তারা। বিশ্বকাপে এখনও টিকে থাকল কোস্টা রিকা। জাপান হারায় কিছুটা সুবিধা হল জার্মানির। স্পেনের কাছে পয়েন্ট নষ্ট করলে বিশ্বকাপ অভিযান শেষ হবে না তাদের। এখনও সুযোগ থাকবে পরের রাউন্ডে যাওয়ার।
এক দিকে জার্মানিকে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিল জাপান। অন্য দিকে স্পেনের কাছে ৭ গোলের ধাক্কা হজম করে নেমেছিল কোস্টা রিকা। এই হারের ফলে ২ ম্যাচ ৩ পয়েন্ট জাপানের। অন্য দিকে কোস্টা রিকারও ২ ম্যাচে পয়েন্ট ৩। এই গ্রুপ আরও ওপেন হয়ে গেল। যে কোনও দু’দল যেতে পারে বিশ্বকাপের প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে।
মেসির পায়ে ‘গোল্ডেন বুট’! কী কী বিশেষত্ব রয়েছে এর
পরের ফুটবল বিশ্বকাপে হয়তো আর দেখা যাবে না লিওনেল মেসিকে। আর্জেন্টিনার অধিনায়ক নিজেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। কাতারে মেসির পায়ে দেখা যাচ্ছে সোনালি রঙের বুট। যা নিয়ে ফুটবলপ্রেমীদের উৎসাহ তুঙ্গে। তার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে এই বুট। শুধু দেখতেই আলাদা নয়, রয়েছে বেশ কিছু বিশেষত্ব। যে ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা মেসির জন্য জুতো তৈরি করে, তারাই বিশেষ বুটটি তৈরি করেছে। প্রথমে গুজব ছড়ায় মেসির জন্য তৈরি বিশেষ বুটে রয়েছে সোনার প্রলেপ। পরে জানা গিয়েছে তেমন কিছু না থাকলেও রয়েছে একাধিক বিশেষত্ব। বুটটির পোশাকি নাম ‘অ্যাডিডাস এঙ মেসি ২০২২ ওয়ার্ল্ড কাপ স্পিডপোর্টাল বুটস’।
মেসির ডান পায়ের বুটে লেখা রয়েছে ‘থিয়াগো ০২ ১১ ১২ এবং মাতেয়ো ১১ ০৯ ১৫’। অর্থাৎ, তার দুই ছেলের জন্মের তারিখ। মেসির বড় ছেলে থিয়াগোর জন্ম ২০১২ সালের ২ নভেম্বর। মেজো ছেলে মাতেয়োর জন্ম ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। বিশেষত্ব রয়েছে বাঁ পায়ের বুটেও। মাঠে নামলে ফুল ফোটায় মেসির এই বাঁ পা। সেই পায়ের বুটে লেখা রয়েছে ছোট ছেলে সিরোর জন্মতারিখ ১০ মার্চ ২০১৮। রয়েছে তার স্ত্রী আন্তোনেল্লার উল্লেখও। লেখা রয়েছে ‘আন্তো’। অর্থাৎ, গোটা পরিবারকে সঙ্গে নিয়েই শেষ বিশ্বকাপ খেলতে মাঠে নামছেন। মেসির জন্য তৈরি করা বুটের বিশেষত্ব এখানেই শেষ নয়। রয়েছে আরও। এক জন বিশিষ্ট শিল্পী মেসির জুতোর নকশা করেছেন। দু’টি বুটেই লেখা রয়েছে মেসির জার্সি নম্বর ১০। রয়েছে আর্জেন্টিনার জাতীয় পতাকার রঙে নীল-সাদা স্ট্রাইপ। প্রস্তুতকারী সংস্থার লোগো ছাড়াও রয়েছে মেসির নিজস্ব ব্র্যান্ডের লোগোও।
শুধু ভাবনা বা দেখার দিক থেকেই আলাদা নয় মেসির বিশ্বকাপের বুট। প্রযুক্তিগত ভাবেও অত্যাধুনিক। সম্পূর্ণ সোনালি রঙের জুতোয় ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। রয়েছে বিশেষ ধরনের স্টাড। মেসি দ্রুত গতিতে দৌড়ানোর সময় কোনও সমস্যা হবে না। পা আটকে যাবে না মাটি বা ঘাসের সঙ্গে। চকিতে ঘুরলেও দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে এই বিশেষ ধরনের স্টাডগুলি। বলের সঙ্গে সংযোগ হবে অনেক মসৃণ। সুবিধা হবে শট নিতে।