পরস্পর যোগসাজসে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নগরীর পাহাড়তলীর ম্যাক ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. জয়নাল আবেদীন ও প্রাইম ব্যাংকের ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল মঙ্গলবার দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম–২ এর উপপরিচালক মো. আকিুল আলম।
আসামিরা হলেন নগরীর পাহাড়তলীর ম্যাক ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন, প্রাইম ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাসিরুদ্দিন আহমেদ, সাবেক ডিএমডি মাহবুবুল আলম, সাবেক এসএভিপি মো. জামিল হুসাইন, সাবেক এফএডিপি মো. তোফায়েল আহমেদ, সাবেক ডিএমডি (বর্তমানে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সাবেক নির্বাহী মো. মেহমুদ হুসাইন, এসডিজি মো. জহিরুল আলম, সাবেক এসএডিপি মো. আব্দুল হাই, সাবেক এঙিকিউটিভ অফিসার মো. রেজা হায়দার, ব্যাংকটির আগ্রাবাদ শাখার সাবেক প্রিন্সিপল অফিসার সুলতান আলাউদ্দিন ও হেড অব ক্রেডিট ডিপার্টমেন্টের সাবেক এডিপি ইকবাল হায়দার। মামলার বাদী ও দুদক কর্মকর্তা মো. আতিকুুল আলম মামলা দায়েরের বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন ওরফে সেলিমের বিরুদ্ধে তার বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে ৮টি ব্যাংক থেকে ৬০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ না করে কানাডায় পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের একটি অভিযোগ তদন্ত করে দুদক। এতে দেখা যায়, জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন ম্যাক গ্রুপ সাধারণত টাওয়ার সরবরাহকারী, সিভিল কন্ট্রাকটর, শিপ ব্রেকার, শস্য আমদানিকারক এবং কেমিক্যাল সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে আসছে। তিনি ২০০৮ সালের ১০ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখায় ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল শিরোনামে একটি চলতি হিসাব খোলেন। গ্যাজ পাইওনিয়র ও তাইওয়ানে তৈরিকৃত এমটি আরাবাহ জাহাজ আমদানির জন্য ঋণ সুবিধা চেয়ে করা আবেদন গ্রহণ করার পূর্বে গ্রাহক জয়নাল আবেদীনের সাথে প্রাইম ব্যাংকের ব্যবসায়িক কোনো সম্পর্ক ছিল না। হিসাব খোলার মাত্র ১ মাসের মধ্যে নামমাত্র জামানতের বিপরীতে ৮৫ কোটি টাকার এলটিআর সুবিধা (গ্রাহক কর্তৃক বাতিলকৃত) এবং হিসাব খোলার মাত্র ২ মাসের মধ্যে ৬৯ কোটি টাকার এলটিআর সুবিধা প্রদান করার মাধ্যমে ঋণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
বিতরণকৃত এলটিআর দায় ৭৪ কোটি ১১ লাখ টাকার বিপরীতে সর্বশেষ মোট ৬৩ কোটি ১৪ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। প্রায় ১১ কোটি টাকা পরিশোধে গ্রাহক জয়নাল আবেদীন ব্যর্থ হয়েছেন। এজাহারে বলা হয়, ব্যাংক কর্মকর্তারা পারস্পরিক যোগসাজস ও অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে গ্রাহক জয়নাল আবেদীনকে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের সুযোগ প্রদান করেছেন।