মোহিতলাল মজুমদার : কবি ও সাহিত্য সমালোচক

| বুধবার , ২৬ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ

মোহিতলাল মজুমদার(১৮৮৮১৯৫২)। বিংশ শতাব্দীর একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি এবং সাহিত্য সমালোচক। এছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রবন্ধকার ছিলেন। মোহিতলালের সাহিত্য সমালোচনার ধারা ছিলো স্বতন্ত্র। তাঁর মননধর্মিতা এবং কবিসুলভ ভাবাত্মক বিচারবোধ সমালোচনা সাহিত্যকে উচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের ২৬ অক্টোবর নদীয়ার কাচঁড়াপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস হুগলির বলাগড় গ্রামে। তাঁর বাবার নাম নন্দলাল মজুমদার এবং তাঁর মাতার নাম হেমমালা দেবী। মোহিতলাল শৈশবেই তাঁর অনন্য প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। চারপাঁচ বছর বয়সে কাশীরাম দাসের মহাভারত পাঠে আগ্রহী হন তিনি। নয় বছর বয়সে পাঠে মনোযোগী হন রোমান্স। বারোতেরো বছর বয়সে পলাশীর যুদ্ধ এবং মেঘনাদ বধ কাব্য পড়ে শেষ করেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি কলকাতার বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। ক্যালকাটা হাইস্কুলে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে ১৯২৮ পর্যন্ত তিনি এই পেশায়ই নিযুক্ত ছিলেন। মাঝে কিছুদিন (১৯১৪১৭) সেটলমেন্ট বিভাগে কানুনগো পদে কাজ করেন। ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগে লেকচারার পদে যোগদান করেন এবং ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে অবসর গ্রহণ করেন। মোহিতলাল মজুমদারের সাহিত্যচর্চার শুরু মানসী পত্রিকার মাধ্যমে। পরে ভারতী ও শনিবারের চিঠিসহ অন্যান্য পত্রপত্রিকায়ও তিনি নিয়মিত লিখতেন। তার প্রথম দিকের কবিতায় স্বপ্নবিহবল তরুণ মনের আশাআকাঙ্ক্ষা ও বেদনা মনোরম ছন্দে প্রকাশ পেয়েছে। তার সাহিত্যে নিজস্ব কাব্যাদর্শ, সৌন্দর্যবোধ ও আধ্যাত্মিক মতবাদের প্রকাশ পায়। তিনি তাঁর সমালোচনামূলক প্রবন্ধগুলিতে ‘কৃত্তিবাস ওঝা’, ‘সব্যসাচী’, ‘শ্রী সত্যসুন্দর দাস’, ইত্যাদি ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। মৌলিক গ্রন্থ, সমালোচনা ও সম্পাদিত গ্রন্থ মিলিয়ে মোহিতলাল মজুমদারের প্রকাশিত গ্রন্থ অনেক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি প্রন্থ হলো: স্বপন পসারী (১৯২১), স্মরগরল (১৯৩৬), আধুনিক বাংলা সাহিত্য (১৯৩৬), বাংলা কবিতার ছন্দ (১৯৪৫), কবি শ্রীমধুসূদন (১৯৪৭), সাহিত্য বিচার (১৯৪৭), বাংলা ও বাঙালী (১৯৫১), কবি রবীন্দ্র ও রবীন্দ্রকাব্য (২খণ্ড১৯৫২, ১৯৫৩) ইত্যাদি। বঙ্গদর্শন পত্রিকা তৃতীয় পর্যায়ে মোহিতলালের সম্পাদনায়ই প্রকাশিত হয়। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রাম কলেজের দশ তলা ভবনে লিফট চালু করা হোক