চট্টগ্রামের সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, শেখ হাসিনার এপিএস গাজী হাফিজুর রহমান লিকু এবং কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করবে দুদক। সংস্থাটির উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধানে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
চট্টগ্রাম ১৬ আসনের সাবেক এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী তার বার্ষিক আয় ছিল ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ লাখ ৬৮ হাজার ৪৬৫ টাকায়। সাবেক এই এমপির নিজ নামে টয়োটা, প্রাডো জিপ রয়েছে, যার মূল্য ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকা। টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার স্টেশন ওয়াগন রয়েছে, যার মূল্য ৮৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ৪ একর জমি, নিজ নামে বরাদ্দকৃত রাজউকের ৩ কাঠার প্লট, ১৪ গণ্ডা অকৃষি জমি, চকবাজার সুপার মার্কেটে দোকান রয়েছে। স্ত্রীর নামে ৫ তলা বাড়ি, ঢাকার কাফরুলে ১৮৭২ বর্গফুটের ফ্ল্যাট রয়েছে।
গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর বিষয়ে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর এপিএস–২ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার স্ত্রীর নামে রামদিয়া কাশিয়ানীতে মেসার্স রাফি অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিসারিজের নামে বিভিন্ন মৌজায় কয়েকশ বিঘা জমি ও মোহাম্মদপুর মধুসিটিতে ৬ নম্বর রোডে ফ্ল্যাট ক্রয়, ঢাকার উত্তরায় ১৭ নম্বর সেক্টরে ৩ নম্বর রোডে সরকারি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জে পৌরসভায় ১০ শতক জমি ক্রয় ও পৈত্রিক জমিতে ৫ তলা বাড়ি নির্মাণ, শ্যালকের নামে ৬ তলা বাড়ি, ১০ তলা কর্মাশিয়াল ও আবাসিক ভবন, ঢাকার মোহাম্মদপুরে মধুসিটিতে ১ বিঘার জমির উপর ৬ তলা ভবন নির্মাণ, কুয়াকাটার লাইট হাউজের পাশে ওশান ব্লু রিসোর্ট রয়েছে। এ ছাড়াও নামে–বেনামে নিজ ও বিভিন্ন আত্বীয়–স্বজনের নামে বিপুল সম্পদ রয়েছে তার।
অপরদিকে অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের বিষয়ে দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় স্বজনপ্রীতি ও অর্থের বিনিময়ে বহু শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, অর্থের বিনিময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক এবং অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া এসব নিয়োগে জামানতকৃত টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে রুপালি ব্যাংকে স্থানান্তর করে প্রতি কোটিতে ৫০ হাজার টাকা করে কমিশন নিয়েছেন। গাড়ির জ্বালানি বাবদ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, গ্রামের বাড়ি শেরপুরে ডুপ্লেঙ বাড়ি, ঢাকার ধানমন্ডিতে ও উত্তরায় একাধিক ফ্ল্যাট ও শেরপুরে জমি কিনেছেন। তার অবৈধভাবে অর্জিত, জ্ঞাত–আয় বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।